নওগাঁয় ঐতিহ্যবাহী পুকুরে হাঁস ধরা উৎসব

নিজস্ব প্রতিবেদক
রিফাত হোসাইন সবুজ, জেলা প্রতিনিধি, নওগাঁ
প্রকাশিত: শুক্রবার ২৭শে সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৯:২৫ অপরাহ্ন
নওগাঁয় ঐতিহ্যবাহী পুকুরে হাঁস ধরা উৎসব

গ্রামবাংলার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য পুনরুজ্জীবিত করতে এবং বিলুপ্তপ্রায় খেলাগুলো নতুন প্রজন্মের কাছে পরিচিত করতে নওগাঁ সদর উপজেলার কাদোয়া গ্রামে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়েছে ঐতিহ্যবাহী পুকুরে হাঁস ধরা প্রতিযোগিতা। বৃষ্টি উপেক্ষা করে পুকুরপাড়ে জমায়েত হয়েছিল স্থানীয় বিভিন্ন বয়সের মানুষের উপচে পড়া ভিড়। এই প্রতিযোগিতা স্থানীয়দের জন্য ছিল এক অনন্য বিনোদন।


শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টায় কাদোয়া গ্রামের পাথারা বড় পুকুরে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কাদোয়া যুব কল্যান সংঘ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জহির রায়হান চলচ্চিত্র সংসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি রহমান রায়হান, নগর কৃষি নগর চাষি নওগাঁর সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, কাদোয়া যুব কল্যান সংঘের প্রতিষ্ঠাতা প্রকৌশলী মাহফুজ হোসেন, সভাপতি মোবাশের হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক নাইম হোসেনসহ বিভিন্ন সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।


শুরুতেই পুকুরে দুই দফায় দুটি হাঁস ছেড়ে দেওয়া হয়। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে ১০০ জনের ২টি দল। পুকুরের চারপাশে জড়ো হয়ে থাকা মানুষ করতালি দিয়ে তাদের উৎসাহিত করতে থাকে। প্রতিযোগীরা কখনো সাঁতার কাটতে আবার কখনও ডুব দিয়ে হাঁসের পেছনে ছুটতে থাকেন। ঘণ্টাব্যাপী চেষ্টা চালিয়ে ১ম দফায় হাঁসটি ধরেন সিয়াম হোসেন এবং ২য় দফায় বিজয় অর্জন করেন নাসির হোসেন।


কাদোয়া যুব কল্যান সংঘের প্রতিষ্ঠাতা প্রকৌশলী মাহফুজ হোসেন বলেন, "আমাদের এই আয়োজন ব্যস্ততার মাঝে আনন্দ বিনোদনের জন্য। ঐতিহ্যবাহী খেলাটি দর্শকরা দারুণভাবে উপভোগ করেছে। আমরা ভবিষ্যতে আরও বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী খেলার আয়োজন করতে চাই। আজকের প্রতিযোগিতাটি বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে অংশগ্রহণ করেছে পর্যটকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।"


অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি রহমান রায়হান বলেন, "ঐতিহ্যবাহী সব খেলা হারিয়ে যেতে বসেছে। পুকুরে হাঁস ধরা প্রতিযোগিতার মাধ্যমে কাদোয়ার তরুণ সংগঠকরা নতুন প্রজন্মকে এই ঐতিহ্যবাহী খেলাগুলোর সঙ্গে পরিচিত করাতে সফল হয়েছে। আমি আশা করি, যুব সমাজকে মাদক থেকে দূরে রাখতে আগামীতেও এ ধরনের আয়োজন অব্যাহত থাকবে।"


এভাবে, কাদোয়া গ্রামে অনুষ্ঠিত পুকুরে হাঁস ধরা উৎসব স্থানীয়দের মধ্যে একটি নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে। খেলাধুলার মাধ্যমে ঐতিহ্য সংরক্ষণের এই প্রচেষ্টা সত্যিই প্রশংসনীয় এবং আগামী প্রজন্মের জন্য এক অনন্য শিক্ষা হিসেবে থাকবে।