ঠাকুরগাঁওয়ে ৯টি প্রাণীসম্পদ দপ্তরে চিকিৎসকসহ জনবল সংকট থাকায় ব্যাহত হচ্ছে পশু চিকিৎসা । চিকিৎসকের অনুপস্থিতে ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছেন হাসপাতালের অফিস সহকারী ও কৃত্রিম প্রজননকর্মীরা।এতে চিকিৎসক ছাড়া ভালো সেবা মিলছে না বলে অভিযোগ সেবা প্রত্যাশীদের। ফলে হাতুড়ে চিকিৎসকদের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে তাঁদের।জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ঠাকুরগাঁওয়ে গরু রয়েছে ৭লাখ ৭০হাজার ৩৪৫ । এ ছাড়া ২হাজার ৩২৩ মহিষ, ৮ লাখ ১১ হাজার ছাগল ও ১১ হাজার ভেড়া রয়েছে।
প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় সুত্রে জানা যায়,জেলার প্রাণিসম্পদ ৯টি দপ্তরের অনুমোদিত পদ রয়েছে ১২৩টি এ সব পদে কর্মরত আছেন ৪৯ জন । এর মধ্যে ৭৪টি পদে রয়েছে শূন্য। তার মধ্যে জেলা ভেটেনারি অফিসার ও একটি উপজেলায় প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নেই।
সম্প্রতি জেলা ভেটেনারি হাসপাতাল ও সদর উপজেলা ভেটেরিনারি হাসপাতাল গিয়ে দেখা যায়,চিকিৎসক না থাকায় বিভিন্ন পশুর চিকিৎসা ও ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছেন হাসপাতালের কর্মরত অফিস সহকারী ও কৃত্রিম প্রজননকর্মী।শহরেন মন্দিরপাড়া এলাকার জুলেখা বেগম বলেন, আমার গরু ক্ষুরা রোগে আক্রান্ত। দুপুর সাড়ে ১১ হাসপাতালে এসেছি। বেলা ১টার মতো বাজে। ডাক্তার নেই। পরে অফিসের লোকজন চিকিৎসা দিয়েছে।
শহরের গোয়ালপাড়ার বাসিন্দা মকসেদ আলী বলেন,গরুর অসুস্থ বাছুর অটোভ্যানে নিয়ে হাসপাতালে এসেছি। ডাক্তার নেই। কম্পাউন্ডার থেকে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হয়েছি। উপজেলা ভেটেরিনারি হাসপাতালের কৃত্রিম প্রজনন কর্মী মিজানুর রহমান বলেন,স্যারের (ভেটনারি সার্জন)পরামর্শে চিকিৎসা দিচ্ছি। তবে চিকিৎসক ছাড়া ব্যবস্থাপত্র লেখার অনুমতি নেই বলে জানান উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. হেমন্ত কুমার রায়।
ভেটেনারি সার্জন রোকনুজ্জমান বলেন, সদরের ২৩টি ইউনিয়নের একজন ভেটেনারী সার্জন দিয়ে চলে পশু চিকিৎসা। বাইরে চিকিৎসা দিতে গেলে তখন হাসপাতালে যারা পশু নিয়ে আসে তাদের চিকিৎসা দেয় উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ও কৃত্রিম প্রজনন কর্মী। একই চিত্র দেখা গেছে জেলা ভেটেনারি হাসপাতালেও। ভেটেরিনারি হাসপাতাল উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার বলেন, গত ৬মাস ধরে ভেটেনারী সার্জন নেই এ হাসপাতালে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের ট্রেনিং অফিসার ডা. নুরুল ইসলাম অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু তিনি অনেক সময় বাইরে যান। এ কারণে আমিসহ এনিমেল এটেনডেন্ট লুৎফর রহহমান,অফিস সহকারী রতন কুমারসহ আমরা পশু চিকিৎসা দিচ্ছি।
এ বিষয়ে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা.আবুল কালাম আজাদ বলেন,পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় অনেক সময় প্রাণী চিকিৎসা অফিস স্টাফরা দিয়ে থাকে। এ সব বিষয়ে তাদের ট্রের্নিং রয়েছে। তবে চিকিৎসকের অনুমতি ছাড়া ব্যবস্থাপত্র ও এন্টিবায়োটিক ওষুধ লিখতে পারবে না কেউই। অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।