সিলেটে বিএনপির ইফতারে আ.লীগ নেত্রী লাকির উপস্থিতি নিয়ে সমালোচনার ঝড়

নিজস্ব প্রতিবেদক
জেলা প্রতিনিধি, সিলেট
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ১৮ই মার্চ ২০২৫ ০৫:০৬ অপরাহ্ন
সিলেটে বিএনপির ইফতারে আ.লীগ নেত্রী লাকির উপস্থিতি নিয়ে সমালোচনার ঝড়

সিলেটে বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতা সিদ্দিকির আয়োজনে ১৬ মার্চ ২০২৫ তারিখে আমান উল্লাহ কনভেনশন হলে অনুষ্ঠিত একটি দোয়া ও ইফতার মাহফিলে আওয়ামী লীগের সমালোচিত নেত্রী লাকি আক্তার ওরফে লাকি আহমেদের উপস্থিতি নিয়ে সিলেটে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে। সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ার পর বিএনপি’র তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। স্থানীয় নেতারা এই ঘটনা নিয়ে দলের হাইকমান্ডের দৃষ্টি আকর্ষণের দাবি করেছেন।


বিএনপি আয়োজিত এই ইফতার মাহফিলের অনুষ্ঠানে লাকি আক্তারের উপস্থিতি নিয়ে বিএনপি’র নেতাকর্মীরা অবাক হয়েছেন, কারণ তিনি অতীতে সিলেট মহানগর যুব মহিলা লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এক সময় আওয়ামী লীগের এই নেত্রী বিএনপির শীর্ষ নেতাদের সাথে ব্যক্তিগত সম্পর্ক স্থাপন করে সিলেট শহর জুড়ে বিভিন্ন বিএনপি প্রোগ্রামে অংশ গ্রহণ করতে দেখা যায়। এমনকি কিছু নেতা দাবি করছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তিনি বিএনপিতে ফেরার চেষ্টা করছেন।


এদিকে, স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে অভিযোগ করেছেন, দলের দুর্দিনে যারা দলের পাশে ছিলেন তাদের যথাযথ মূল্যায়ন না করে আওয়ামী লীগ থেকে আসা নেতাদের পুনর্বাসন করা হচ্ছে। তারা জানান, বিগত সরকারের সময় লাকি আক্তার সিলেটে অনেক বিএনপি নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষকে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা আদায় করেছেন। মিথ্যা ধর্ষণ ও হয়রানির অভিযোগে অনেককে হয়রানী করা হয়েছিল বলেও তারা দাবি করেন। বিএনপি’র অনেক নেতাকর্মী পুলিশের হাতে হয়রানির শিকার হয়ে দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় থাকতে পারেননি, অথচ আজ তাদেরই লাকি আহমেদকে বিএনপির মঞ্চে স্থান দেওয়া হচ্ছে। এটি তাদের কাছে অত্যন্ত হতাশাজনক।


এ বিষয়ে কিছু বিএনপি নেতাকর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, লাকি আক্তারের কর্মকাণ্ডের ফলে এলাকার মানুষের মনে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। তারা বলেন, “আমরা ১৭ বছর ধরে হামলা-মামলার শিকার হয়ে এলাকায় থাকতে পারিনি, অথচ এখন আওয়ামী লীগ থেকে আসা কেউ দলের মঞ্চে জায়গা পাচ্ছে।” তারা দলের হাইকমান্ডের কাছে দাবি জানিয়েছেন, এই ধরনের ব্যক্তি বিএনপির মঞ্চে আসলে দলের মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয়, তাই তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।


তবে এই বিষয়ে জেলা বিএনপি’র কিছু নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। ঘটনা নিয়ে দলের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি। তবুও স্থানীয় নেতাকর্মীরা এই ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দলের হাইকমান্ডের প্রতি আহ্বান জানিয়ে যাচ্ছেন।