প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ঢুকে স্মৃতিকাতর বিএনপি নেতারা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: সোমবার ১৮ই নভেম্বর ২০১৯ ১১:০৮ পূর্বাহ্ন
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ঢুকে স্মৃতিকাতর বিএনপি নেতারা

এক যুগেরও বেশি সময় পর গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যান বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা। দলটির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ও খায়রুল কবির খোকন বিএনপি মহাসচিবের একটি চিঠি নিয়ে দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রবেশ করেন। এক সময় যে কার্যালয়ে তাদের অবাধ যাতায়াত ছিল, দীর্ঘদিন পর সেই কার্যালয়ে গিয়ে কিছুটা স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েন বিএনপির এই দুই নেতা। অতীতের স্মৃতিচারণও করেন তারা। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পক্ষ থেকেও আন্তরিকতার ঘাটতি ছিল না। প্রধানমন্ত্রীর চিঠি গ্রহণের পাশাপাশি তাদের আপ্যায়নও করেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়–য়া ও কার্যালয়ের কর্মকর্তারা। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্রে খবরটি জানা গেছে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একাধিক সূত্র জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে সম্পাদিত চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকের বিস্তারিত প্রকাশের দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে লেখা চিঠি নিয়ে বিএনপি নেতা আলাল ও খোকন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রবেশ করেন। এ সময় তাদের সঙ্গে গণমাধ্যমকর্মীরাও ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-২ ওয়াহিদা আক্তার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ঢোকার পাস দেন বিএনপির দুই নেতাকে। তারা কার্যালয়ে ঢুকে ওয়াহিদা আক্তারের পাশের কক্ষে বসেন। বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের আমলে ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ওই কক্ষে বসতেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী। কক্ষে ঢুকেই সেকথা মনে পড়ে যায় খায়রুল কবির খোকনের। তিনি পুরনো স্মৃতি হাতড়ে বলেন, ‘এই রুমেই হারিছ চৌধুরী বসতেন। আগের মতোই আছে দেখছি সবকিছু...’।

এ সময় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী বিপ্লব বড়–য়া খোকনের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা মাঝে মধ্যে আসবেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে।’ প্রধানমন্ত্রীর চিঠি গ্রহণের পাশাপাশি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ও খায়রুল কবির খোকনকে ফলের রস, বাদাম, চিপস ও পেয়ারা খেতে দেওয়া হয়। বিএনপির এই দুই নেতা প্রায় ২০-২৫ মিনিট ছিলেন। এ সময় অন্যদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-২ ওয়াহিদা আক্তার, প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষার এবং সহকারী প্রেস সচিব এমএম ইমরুল কায়েস উপস্থিত ছিলেন। বিএনপি নেতাদের সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় করেন বিপ্লব বড়ুয়া। বিএনপি নেতারাও আওয়ামী লীগের আসন্ন জাতীয় সম্মেলনের প্রস্তুতি বিষয়ে জানার আগ্রহ দেখান।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্র বলেছে, সংযুক্ত আরব আমিরাত সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশেই বিএনপি নেতারা অত্যন্ত আন্তরিক পরিবেশে সময় কাটিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে। তবে প্রধানমন্ত্রীকে লেখা এই চিঠিতে কোথাও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক রহমানের কথা উল্লেখ নেই। এমনকি বর্তমান সময়ের আলোচিত খালেদা জিয়ার কারামুক্তির দাবির কথাটিও নেই। এমনকি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আলাপচারিতার সময়ও এ বিষয়ে কোনো কথা বলেননি বিএনপির দুই নেতা। বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর এই প্রথমবারের মতো বিএনপির কোনো কেন্দ্রীয় নেতা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গেলেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধান ফটক পর্যন্ত গিয়েছিলেন একবার। এবারই প্রথম প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বাধীন সরকারপ্রধারের কার্যালয়ের ভেতরে গেলেন বিএনপি নেতারা। ২০০৬ সালের পর থেকে রাষ্ট্রক্ষমতার বাইরে বিএনপি।

ইনিউজ ৭১/এম.আর