হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুতে শূন্য বিরোধীদলীয় নেতার পদে বসতে যাচ্ছেন তার ছোট ভাই জিএম কাদের। জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জিএম কাদেরকে বিরোধীদলীয় হিসেবে ঘোষণা করতে স্পিকার ড . শিরিন শারমিন চৌধুরীকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার বিকালে জাতীয় পার্টির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদের নেতৃত্বে কয়েকজন সংসদ সদস্য স্পিকারের দপ্তরে গিয়ে এই চিঠি পৌঁছে দেন। তবে ওই সময় স্পিকার কার্যালয়ে ছিলেন না বলে জানা গেছে। স্পিকারের একান্ত সচিব কামাল বিল্লাহ চিঠিপ্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ‘…মহান জাতীয় সংসদে বর্তমানে জাতীয় পার্টির প্রধান বিরোধী দল হিসেবে রয়েছে। আপনি নিশ্চয় অবগত আছেন যে আমাদের দলের চেয়ারম্যান ও সংসদের বিরোধী দলের নেতা বিগত ১৪ জুলাই ২০১৯ তারিখে ইন্তেকাল করেছেন।
ফলে মহান জাতীয় সংসদের বিরোধী দলের নেতা পদটি বর্তমানে শূন্য রয়েছে। ইতোমধ্যে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়ামের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত সিদ্ধান্ত এবং পার্টির সংসদীয় দলের সংখ্যাগরিষ্ঠ সংসদ সদস্যরা, বিরোধী দলের নেতা হিসেবে ১৮ লালমনিরহাট-০৩ থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত আমি গোলাম মোহাম্মাদ কাদেরকে মহান সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে মনোনয়ন দেয়ার জন্য প্রস্তাব করছে। অতএব উপরোক্ত বিষয়ে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম এবং পার্টির সংসদীয় দলের মনোনীত সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে আমাকে নিয়োগ দানের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আপনাকে বিশেষভাবে অনুরোধ করছি।’
জাপার ২৫ এমপির ১৫ জন জিএম কাদেরকে সমর্থন করে স্বাক্ষর করেছেন চিঠিতে। জাপার সূত্র জানিয়েছে, জাপার বাকি ১০ এমপির মধ্যে আরো দুইজনের সমর্থন রয়েছে জিএম কাদেরের পক্ষে। বাকিরা এরশাদপত্নী রওশন এরশাদের পক্ষে। তিনি বিরোধীদলীয় উপনেতা পদে বহাল থাকছেন বলে নিশ্চিত করেছে জাপা সূত্র। সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা মন্ত্রী এবং উপনেতা প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা পান। জাতীয় সংসদের কার্যপ্রণালী-বিধি অনুযায়ী বিরোধীদলীয় নেতা ও উপনেতার নিয়োগ দেন স্পিকার।
এরশাদের মৃত্যুর পর জাপার এমপির সংখ্যা ২৫। নিয়ামনুযায়ী, বিরোধীদলীয় নেতা হতে ১৩ জন এমপির সমর্থন প্রয়োজন জিএম কাদেরের। জাপার গঠনতন্ত্রের ২২ ধারা অনুযায়ী দলের চেয়ারম্যান হবেন এমপি নির্বাচিত হলে পদাধিকারবলে সংসদীয় দলের প্রধান। ২০১৬ সালের কাউন্সিলে এ ক্ষমতা দেওয়া হয় চেয়ারম্যানকে।
একাদশ নির্বাচনের পর স্ত্রীকে সরিয়ে নিজেই বিরোধীদলীয় নেতা হয়েছিলেন এরশাদ। জিএম কাদেরকে উপনেতা নিয়োগ করেন। আড়াই মাসের মাথায় এ সিদ্ধান্ত বদলে ফেলেন। গত ২২ মার্চ জিএম কাদেরকে সরিয়ে উপনেতা করেন রওশন এরশাদকে।
গত ১৪ জুলাই এরশাদের মৃত্যুর পর জাপার চেয়ারম্যান হন জিএম কাদের। তাকে এ পদে মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বিবৃতি দেন রওশন এরশাদ। দেবর-ভাবীর দ্বন্ধে প্রশ্ন ছিল, কে হবেন বিরোধীদলীয় নেতা। মঙ্গলবার দুপুরে জিএম কাদের সাংবাদিকদের বলেন, আগামী ৮ সেপ্টেম্বর সংসদ অধিবেশন শুরুর আগে বিরোধীদলীয় নেতা কে হবেন- এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সংসদীয় দল।
ইনিউজ ৭১/এম.আর
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।