ছাত্রদলের চলমান সঙ্কট নিরসন দুই এক দিনের মধ্যে হবে বলে মনে করছে বিএনপি হাইকমান্ড। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছে ছাত্রদলের বিক্ষুব্ধরা। দাবিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানো হলে ছাড় না দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা। ছাত্রদলের নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি গঠনে ১৫ জুলাই কাউন্সিলের ডেডলাইন ধরে বিএনপি যে তফসিল ঘোষণা করে তা প্রত্যাখ্যান করে ছাত্রদলের একাংশ দলীয় কার্যালয় অবরুদ্ধ এবং বেশ কয়েকদিন বিক্ষোভ করে। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিক্ষোভকারী এক ডজন নেতাকে বহিষ্কারের ঘোষণা দিয়েও শেষ রক্ষা করতে পারেনি বিএনপি। ফলে কাউন্সিল কার্যক্রম স্থগিত করে তাদের সঙ্গে আলোচনার জন্য দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস এবং গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে দায়িত্ব দেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এ নিয়ে সোমবার (৮ জুলাই) চূড়ান্ত বৈঠক হবে বলে সূত্রে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট সংকটের ইতিবাচক সমাধান হতে যাচ্ছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই নেতাকে ছাত্রদলের বিক্ষুব্ধদের প্রস্তাবনা সমন্বয় করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে। এ লক্ষ্যে সোমবার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের সঙ্গে সাবেক ছাত্রনেতাদের নিয়ে গঠিত সার্চ কমিটির বৈঠক হবে। তবে এ ক্ষেত্রে ২০০০ সালের এসএসসি ধরে ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠনে দলের আগের সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে। আর বিক্ষুব্ধদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ছাত্রদলের কাউন্সিল কার্যক্রম স্থগিত থাকায় পুনঃতফসিল ঘোষণা হবে। সে ক্ষেত্রে ১৫ জুলাই কাউন্সিলের তারিখও পেছানো হবে। রোববার রাতে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সার্চ কমিটির সঙ্গে বৈঠকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এমন নির্দেশনা দেন। বৈঠকে স্কাইপিতে যুক্ত ছিলেন তারেক রহমান। বৈঠকে ছাত্রদলের বহিষ্কৃত ১২ নেতার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের বিষয়েও ইতিবাচক নির্দেশনা দেন তিনি।
ছাত্রদলের সংকট নিরসনে গত ২৯ জুন অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিএনপির দুই সদস্য মির্জা আব্বাস ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে দায়িত্ব দেন তারেক রহমান। পরে তাদের সঙ্গে দলের যুগ্ম-মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলালকেও যুক্ত করা হয়। এরপর দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা ছাত্রদলের বিক্ষুব্ধদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। সেখানে সংকট নিরসনে সর্বশেষ বিকল্প হিসেবে তাদের দিয়ে একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠনের প্রস্তাব দেয় বিক্ষুব্ধরা। যারা ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠনে নির্বাচনের তফসিল ঠিক রেখে কাউন্সিলের কার্যক্রম শেষ করবে। এ ক্ষেত্রে বিলুপ্ত কমিটির নেতাদের মধ্যে যারা বিএনপির নির্বাহী কমিটিতে আছেন (রাজীব আহসান, মামুনুর রশিদ মামুন ও আকরামুল হাসান) তাদের কমিটিতে রাখা হবে না। দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা বিক্ষুব্ধদের সেই প্রস্তাবনা তারেক রহমানের কাছে পাঠায়। তবে এ ক্ষেত্রে বিএনপি ছাত্রদলের বিলুপ্ত কমিটির নেতাদের যোগ্যতা অনুযায়ী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ অঙ্গ-সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন করার বিকল্প প্রস্তাবও বিবেচনায় রাখে। এমন প্রেক্ষাপটে সার্চ কমিটির সঙ্গে তারেক রহমানের এ বৈঠক হয়। বৈঠকে সাবেক ছাত্রনেতাদের মধ্যে শামসুজ্জামান দুদু, আমানউল্লাহ আমান, আসাদুজ্জামান রিপন, খায়রুল কবির খোকন, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, আকরামুল হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে বিক্ষুব্ধ ছাত্রদলের নেতারাও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজেদের মধ্যে রুদ্ধদার বৈঠক করেছে। সূত্র জানায়, তারা দলীয় সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন। তাদের দাবির প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানো হলেও আবারো কঠোর কর্মসূচির কথা ভাবছেন তারা। বিক্ষুব্ধ ছাত্রদল নেতাদের মধ্যে একজন বায়েজিদ আরেফিন বলেন, আমরা দলীয় সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি। আশা করছি হাইকমান্ড আমাদের আবেদন বিবেচনা করে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেবেন। এ বিষয়ে ছাত্রদলের কাউন্সিল পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবীর খোকন বলেন, ‘আমরা সমাধানের দ্বারপ্রান্তে রয়েছি। আশা করছি দুই এক দিনের মধ্যেই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।’
ইনিউজ ৭১/এম.আর
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।