প্রকাশ: ৬ অক্টোবর ২০২৫, ১৬:২২
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার অংশগ্রহণের বিষয়টি তার শারীরিক সক্ষমতার ওপর নির্ভর করছে বলে জানিয়েছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সোমবার (৬ অক্টোবর) বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক ভার্চুয়াল সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন। সাক্ষাৎকারের প্রথম পর্ব ওইদিনই প্রকাশ করা হয়।
তারেক রহমান বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করার প্রতিটি আন্দোলনে খালেদা জিয়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। স্বৈরাচারের চাপ, কারাভোগ কিংবা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার মুখেও তিনি আপোষ করেননি। কিন্তু আজ তিনি অসুস্থ, যা একদিনে ঘটেনি। মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে তাকে কারাগারে নেওয়া হয়েছিল এবং সেখান থেকেই তার শারীরিক অবস্থার অবনতি শুরু হয়।
তিনি বলেন, “আমরা দেখেছিলাম একজন সুস্থ মানুষকে জেলখানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, আর বেরিয়ে এসেছেন অসুস্থ হয়ে। তাকে যথাযথ চিকিৎসার সুযোগ থেকেও বঞ্চিত করা হয়েছে। তবুও যিনি বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য এত বড় অবদান রেখেছেন, আমি বিশ্বাস করি আসন্ন নির্বাচনে যদি তার শারীরিক অবস্থা অনুমতি দেয়, তিনি নিশ্চয়ই কোনো না কোনোভাবে ভূমিকা রাখবেন।”
বিএনপির ভবিষ্যৎ নেতৃত্বে জিয়া পরিবারের প্রভাব নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তারেক রহমান বলেন, রাজনীতি কখনো পরিবারকেন্দ্রিক নয়, এটি মানুষের সমর্থনের ওপর নির্ভর করে। যেমন একজন চিকিৎসকের সন্তান চিকিৎসক হলে সে ভালোও করতে পারে, আবার নাও পারে। তেমনি একজন রাজনীতিবিদের সন্তান রাজনীতিতে এলে তাকে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করতে হয়।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের মতো দেশে রাজনীতি করতে গেলে নানা ধরনের নিপীড়ন ও হয়রানির শিকার হতে হয়। আমি নিজেও তা ভোগ করেছি। শারীরিক নির্যাতন, জেল-জুলুম, মিথ্যা অপপ্রচার—সবকিছুর ভেতর দিয়েই আমি গিয়েছি। আজও সেই নির্যাতনের চিহ্ন বহন করছি।”
তারেক রহমান আরও বলেন, রাজনীতি পরিবারের উত্তরাধিকার দিয়ে হয় না, এটি মানুষের আস্থা ও সমর্থনের ভিত্তিতে টিকে থাকে। যে নেতা জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারবেন, সংগঠনকে সুসংগঠিত রাখতে পারবেন, তিনিই সামনে এগিয়ে যাবেন।
তিনি বিশ্বাস করেন, সময় ও পরিস্থিতিই প্রমাণ করবে কে সত্যিকারের নেতৃত্ব দিতে সক্ষম। জনগণের ইচ্ছা ও প্রত্যাশার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নেতৃত্বই ভবিষ্যতের বাংলাদেশ গঠনে ভূমিকা রাখবে।
অন্যদিকে, বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা বর্তমানে পর্যবেক্ষণে রয়েছে এবং দলের পক্ষ থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত তার স্বাস্থ্যের উন্নতি ও চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী নেওয়া হবে।