প্রকাশ: ১৭ আগস্ট ২০২৫, ১৯:৪০
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে চলে যাওয়ার পর তার ফোনালাপগুলো ধীরে ধীরে প্রকাশ পেতে শুরু করেছে। এর মধ্যে সর্বশেষ ফাঁস হওয়া রেকর্ডে দেখা গেছে, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর সঙ্গে শেখ হাসিনার কথোপকথন। রোববার (১৭ আগস্ট) প্রবাসী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ৫ মিনিট ৩৪ সেকেন্ডের অডিও রেকর্ডটি পোস্ট করেন।
অডিওতে ইনু শেখ হাসিনাকে বলেছেন, তার নেওয়া সিদ্ধান্ত সঠিক হয়েছে এবং সকলকে গ্রেফতার করতে বলা উচিত, যাতে আর কোনো মিছিলের আয়োজন হয় না। এতে শেখ হাসিনা সম্মতি জানিয়ে বলেন, তারা রণক্ষেত্রের সাথী। এরপর ইনু ইন্টারনেট চালুর পরামর্শ দেন, যা নিউজ এবং মিডিয়ার কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। শেখ হাসিনা জানান, তখন ইন্টারনেট পুড়ে যাওয়ায় তিনি তা চালু করতে পারছেন না এবং অন্য সরকার আসলে তা করবে।
অডিওর আরও অংশে ইনু জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, শিবির আবারও এক্সপোজড হয়েছে এবং তাদের ধরার সুযোগ এলে তাদের মেরুদণ্ড ভেঙে দিতে হবে। শেখ হাসিনা এই প্রস্তাবে সায় দেন এবং বলেন, এতদূর পর্যন্ত যা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তার সবই সঠিক।
ফলে দেখা যাচ্ছে, গণঅভ্যুত্থানের সময় সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত ও পরিকল্পনা নিয়ে দুই নেতা তৎকালীন পরিস্থিতি অনুযায়ী আলোচনা করেছেন। এর আগে ঢাকা দক্ষিণ সিটির সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের সঙ্গে শেখ হাসিনার আরেকটি ফোনালাপ ফাঁস হয়, যা তখনও ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল।
বিগত এক বছরে এ ধরনের অডিও রেকর্ডগুলোতে দেখা গেছে, শেখ হাসিনার হাফ ডজনের বেশি কল রেকর্ড ফাঁস হয়েছে। এসব রেকর্ড রাজনৈতিক মহলে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে এবং সংশ্লিষ্ট সময়ের ঘটনাগুলো নিয়ে নানা প্রশ্ন উত্থাপন করেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ফাঁস হওয়া রেকর্ডগুলো বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে।
ফলে গণঅভ্যুত্থান ও সরকারের পতনের পর শেখ হাসিনার যোগাযোগ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ধরণ নিয়ে এখনো জনমনে নানা বিতর্ক ও জল্পনা চলছে। বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মে এই অডিওর বিশ্লেষণ ও আলোচনার ধারা অব্যাহত রয়েছে।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ভবিষ্যতে আরও রেকর্ড ফাঁস হতে পারে, যা সময়ের সঙ্গে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে প্রভাবিত করতে পারে। ইতিমধ্যে এই অডিও প্রকাশ্যে আসার পর বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও বিশ্লেষকরা এর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।
শ্রোতা ও নাগরিকরা এই ঘটনা নিয়ে মতামত ব্যক্ত করছেন এবং দেশের রাজনীতিতে এর প্রভাব কী হতে পারে তা নিয়ে বিভিন্ন আলোচনা শুরু হয়েছে।