প্রকাশ: ৩০ মে ২০২৫, ১৬:১৭
আজ ৩০ মে, বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি, স্বাধীনতার ঘোষক ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী। ১৯৮১ সালের এই দিনে রাষ্ট্রপতি থাকা অবস্থায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে এক ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানে নির্মমভাবে নিহত হন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা। তার সহযোদ্ধারা মনে করেন, যদি তিনি আরও কিছুদিন বেঁচে থাকতেন, তবে দেশ অনেকদূর এগিয়ে যেত।
১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ কালরাতে চট্টগ্রামে ‘আমি মেজর জিয়া বলছি’—এই ঘোষণায় জেগে উঠেছিল দিগভ্রান্ত জাতি। স্বাধীনতার সুরে উদ্বুদ্ধ হয়ে বাংলার মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়ে মুক্তিযুদ্ধে। শুধু স্বাধীনতার ঘোষণাই নয়, সেই থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত নানা বাঁকে জিয়া দেশের জন্য অক্লান্তভাবে কাজ করে গেছেন।
বগুড়ার বাগবাড়ীর সন্তান জিয়াউর রহমান ১৯৩৬ সালের ১৯ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। শিক্ষাজীবনে মেধাবী এই তরুণ পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়ে চৌকস অফিসার হিসেবে প্রতিষ্ঠা পান। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে জাতির জন্য স্বাধীনতার ডাক দেন।
মুক্তিযুদ্ধের পর তিনি সেনাপ্রধান এবং পরে রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। রাজনীতিতে বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা হিসেবে জিয়া নতুন দিগন্তের সূচনা করেন। তার নীতিতে ছিল সাধারণ মানুষের পাশে থেকে কাজ করার প্রত্যয়, যা তার ‘১৯ দফা কর্মসূচি’র মধ্যেই প্রতিফলিত হয়।
তার শাসনামলে স্বনির্ভরতার বার্তা প্রচার করে দেশের কৃষি, খাদ্য উৎপাদন ও শিল্পে নতুন প্রাণ সঞ্চার করেন। একসময় দুর্ভিক্ষে ধুঁকতে থাকা দেশ তার আমলে খাদ্য উদ্বৃত্ত উৎপাদনে সক্ষম হয়। স্বল্প সময়ে রাষ্ট্রপ্রধান হয়েও দেশের উন্নয়নে রেখে যান স্থায়ী ছাপ।
ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, জিয়ার স্বাধীনতার ঘোষণা ছিল একক সিদ্ধান্ত, যা তার অসীম সাহসিকতার প্রমাণ। তিনি রাজনীতিকে বক্তৃতা নির্ভরতা থেকে কাজ ভিত্তিক ধারায় রূপান্তরিত করেন এবং বাস্তবমুখী নেতৃত্বের অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।
অন্যদিকে এলডিপির সভাপতি অলি আহমদ বীর বিক্রম বলেন, বিদ্রোহের সময় থেকেই তার সঙ্গে জিয়ার ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে। যুদ্ধের ময়দানে তার সাহস, নেতৃত্ব ও দূরদর্শিতা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিল। তিনি বিশ্বাস করেন, জিয়া বেঁচে থাকলে দেশ আরও অনেক কিছু অর্জন করত।
শহীদ জিয়া আজ আর নেই, কিন্তু তার আদর্শ ও কৃতিত্ব এ দেশের ইতিহাসে চিরভাস্বর। জনমানুষের হৃদয়ে তিনি আজও জীবিত এক কিংবদন্তি, যিনি মৃত্যুর মধ্যেও অমর।