টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমা ময়দান দখল নিয়ে সংঘর্ষ, ৩ জন নিহত, শতাধিক আহত

নিজস্ব প্রতিবেদক
মোঃ সাইফুল ইসলাম, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: বুধবার ১৮ই ডিসেম্বর ২০২৪ ১২:১৮ অপরাহ্ন
টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমা ময়দান দখল নিয়ে সংঘর্ষ, ৩ জন নিহত, শতাধিক আহত

টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দান দখলকে কেন্দ্র করে মাওলানা যোবায়ের ও সাদপন্থিদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) ভোর রাতে শুরু হওয়া এই সংঘর্ষে তিনজন নিহত এবং শতাধিক আহত হয়েছেন।  


নিহতদের মধ্যে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার বাচ্চু মিয়া (৭০), ঢাকার দক্ষিণখানের বেলাল (৬০) এবং বগুড়ার তাজুল ইসলাম (৭০) নামের তিনজনের নাম নিশ্চিত হয়েছে। আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর, তারা বর্তমানে টঙ্গী আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আহতদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকজন হলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আব্দুর রউফ (৫৫), ময়মনসিংহের মজিবুর রহমান (৫৮) এবং সাভারের ফয়সাল (২৮)।  


স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার ভোর ৩টার দিকে সাদপন্থি মুসল্লিরা তুরাগ নদীর পশ্চিম তীর থেকে ময়দানে প্রবেশের চেষ্টা করলে যোবায়েরপন্থিরা তাদের বাধা দেয়। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপসহ পাল্টাপাল্টি হামলা শুরু হয়। এক পর্যায়ে সাদপন্থিরা ময়দানে প্রবেশ করতে সক্ষম হলে ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হয়, যা কয়েক ঘণ্টা স্থায়ী হয়।  


এই ঘটনার প্রেক্ষিতে মাওলানা যোবায়েরপন্থি তাবলিগ জামাতের মিডিয়া সমন্বয়কারী হাবিবুল্লাহ রায়হান জানান, এর আগে ১৭ ডিসেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে মাওলানা যোবায়েরকে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছিল, যাতে ১৮ ডিসেম্বর দুপুরে ইজতেমা ময়দান বিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত ঘোষণা করার কথা ছিল। তবে ভোররাতে সাদপন্থিরা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে এবং সংঘর্ষের মাধ্যমে ময়দানে প্রবেশ করে।  


এদিকে, সাদপন্থিদের প্রভাবশালী নেতা মুয়াজ বিন নূর এক ভিডিও বার্তায় দাবি করেছেন যে তারা বর্তমানে ইজতেমা ময়দানের নিয়ন্ত্রণে রয়েছেন। তিনি বলেন, "যোবায়েরপন্থিদের আক্রমণে আমাদের একজন ভাই শহীদ হয়েছেন।"  


টঙ্গী পশ্চিম থানার ওসি হাবিব ইস্কান্দার জানিয়েছেন, এই সংঘর্ষের ফলে ৩ জন নিহত এবং অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি বর্তমানে শান্ত রয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে পুলিশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে।  


এ ঘটনার পর স্থানীয় প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ইজতেমা মাঠে আরও তৎপর হয়ে উঠেছে যাতে ভবিষ্যতে এমন সহিংস ঘটনা এড়ানো যায়।