কাশ্মীরের পাহাড়ি রাস্তায় ১০ ঘণ্টা হুইলচেয়ার ঠেলে ঠেলে অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছালেন শামিমা নামে এক গৃহবধূ। পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ হলে একজন নারীকে নির্জন পাহাড়ি রাস্তায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে পায়ে হেঁটে হাসপাতালে যেতে হয়। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার। শ্রীনগরের হাসপাতালের সিঁড়ি দিয়ে উঠার সময়েই শনিবার রীতিমতো হাঁফাচ্ছিলেন শামিমা ও তার স্বামী গোলাম মোহাম্মদ। হাসপাতালে এসেই তাড়াতাড়ি হুইলচেয়ার আনতে ছুটলেন শামিমা। কিডনির অসুখ আর শ্বাসকষ্টের চিকিৎসার জন্য স্বামীকে নিয়ে নিয়মিত আসতে হয় শ্রীনগরের এসএমএইচএস হাসপাতালে। হুইলচেয়ারে স্বামীকে বসিয়ে নিয়ে যেতে যেতে শামিমা বললেন, শুক্রবার ওর অবস্থা হঠাৎ অনেক খারাপ হয়ে যায়। আগের ওষুধে কাজ হচ্ছে না। বারবার বলছিল- আমি হয়তো আর বাঁচব না।
কাশ্মীরে এই নিষেধাজ্ঞার মধ্যে হাসপাতালে আসার জন্য কোনো গাড়ি পাননি শামিমা। উপায় না থাকায় শনিবার ভোর ৫টার দিকে স্বামীকে নিয়ে পায়ে হেঁটেই শ্রীনগরের দিকে রওনা দেন তিনি। কয়েক মিনিট চলার পরেই হাঁপিয়ে যান গোলাম মোহাম্মদ। এ সময় বারবার স্ত্রীকে অনুরোধ করেন ফিরে যেতে। শামিমা বলেন, আমি কিন্তু ওর কথা শুনিনি। জানতাম হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারলে তবু ওর বাঁচার সম্ভাবনা আছে। ভেবেছিলাম রাস্তায় কোনো একটা গাড়িতে জায়গা পাব। কিন্তু রাস্তা পুরোটাই ফাঁকা ছিল।
অবশেষে এভাবে ১০ ঘণ্টা পায়ে হেঁটে বেলা ৩টার দিকে হাসপাতালে পৌঁছেন ওই কাশ্মীরি দম্পতি। হাসপাতালে এসেই দ্রুত জরুরি বিভাগে ভর্তি করেন শামিমা। গোলাম মোহাম্মদের প্রতি সপ্তাহে ডায়ালাইসিস প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তাতে মাথায় বাজ পড়ে শামিমার। এ রোগী নিয়ে তিনি বাড়ি ফিরবেন কীভাবে তা নিয়ে পড়েন আরেক দুশ্চিন্তায়।
ইনিউজ ৭১/এম.আর
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।