তৃণমূল কংগ্রেস পাহাড়ে শান্তি আনলেও বিজেপি আগুন লাগায়। শুক্রবার ভারতের শিলিগুড়ির অদূরে নকশালবাড়িতে দলীয় প্রচার সভা থেকে এভাবেই বিজেপিকে বিঁধলেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই আগুন লাগানোর সঙ্গে সিপিএম এবং কংগ্রেসকে একই ভাবে আক্রমণ করেছেন তিনি। পাশাপাশি কড়া ভাষায় আক্রমণ শানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও। তার পাঁচ বছরে দফায় দফায় বিদেশ সফর নিয়েও মোদিকে খোঁচা দিয়েছেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রীর প্রত্যয়ী ঘোষণা, পাহাড় ও সমতলকে আলাদা করা যাবে না।
মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণের সিংহভাগ জুড়ে ছিল পাহাড় ও সমতলের পারস্পরিক ঐক্যের বার্তা। তিনি বলেন, পাহাড় সমতলের ঝগড়া চাই না। কোনও বিভেদ চাইনা। আমরা একসঙ্গে থাকব। সে শিলিগুড়ি হোক, ফাঁসিদেওয়া হোক, চোপড়া হোক, দার্জিলিং হোক আর কালিম্পং হোক, একসঙ্গে থাকব। কোনও ভাগাভাগি হতে দেব না। আমরা চাই পাহাড় সমস্যার সমাধান। মোদিবাবু ঝুটা হ্যায় বলেও কটাক্ষ করেন মমতা। এদিন মুখ্যমন্ত্রীর জনসভায় নকশালবাড়ির আদিবাসী ময়দানে থিক থিকে ভিড় ছিল। চা বাগান অধ্যুষিত এই এলাকায় প্রচুর চা শ্রমিক এসেছিলেন। পাহাড় সমতলের একতা বোঝাতে তিনি পাহাড়ের ভূমিপুত্র মোর্চা সমর্থিত তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী অমরসিং রাই, মোর্চা নেতা বিনয় তামাংদের সঙ্গে দুই আদিবাসী চা শ্রমিক মহিলাকে মঞ্চে ডেকে নিয়ে পাশে মন্ত্রী গৌতম দেবের সঙ্গে হাত মিলিয়ে মমতা বলেন, দেখুন আমরা সবাই এক সঙ্গে আছি।
দার্জিলিংয়ের এবারের নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ দাবি করে মমতা বলেন,ভূমিপুত্রকেই এবার আমরা প্রার্থী করেছি। প্রধানমন্ত্রীকে সরাসরি আক্রমণ করে বলেন, মোদি এসে বলে যান বাংলায় কিছু হয়নি। আমি বলি দিল্লিতে কী হয়েছে? পাঁচ বছরে শিলিগুড়ি, মাটিগাড়া, দার্জিলিংয়ে কিছু দিয়েছ? পশ্চিমবঙ্গে কিছু দিয়েছ? আমরাই সব করেছি। তিনি কন্যাশ্রী থেকে সমব্যথী, মহাসড়ক থেকে পাহাড়ে বিশ্ববিদ্যালয়, বেঙ্গল সাফারির প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। পাহাড়ের গোর্খাদের জাতিসত্ত্বার দাবির বিষয়টিও এদিন মমতার দৃষ্টি এড়ায়নি। তিনি বলেন, গোর্খাদের আইডেনটিটির বিষয়টি আমরাই করব। আদিবাসীদের আইডেনটিটির বিষয়টিও আমরা করব।
প্রায় ৪০ মিনিটের ভাষণে বারবারই মোদিকে এক্সপায়ারি প্রাইম মিনিস্টার বলে কটাক্ষ করেন মমতা। তিনি বলেন, আপনি তো বলেছিলেন বন্ধ সাতটি চা বাগানকে অধিগ্রহণ করবেন। পাঁচ বছর কেটে গিয়েছে একটা চা বাগান খুলতে পেরেছেন? খালি মিথ্যে প্রতিশ্রুতি। আমরা চা বাগানে ৪৭ কেজি করে চাল দিচ্ছি। শ্রমিকদের স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ থেকে পড়ার খরচ সবই দিচ্ছি। কংগ্রেস, সিপিএম ও বিজেপি’কে জগাই মাধাই গদাই বলে তীব্র কটাক্ষ করে মমতা বলেন, শিলিগুড়ি, ফাঁসিদেওয়া, মাটিগাড়া-নকশালবাড়িতে তো সিপিএম কংগ্রেসকে ভোট দিয়ে জিতিয়েছেন। আমরা কিন্তু ভোট না পেলেও এখানে কাজ করেছি। কিন্তু এবার সিপিএমকে ভোট দিয়ে, কংগ্রেসকে ভোট দিয়ে ভোট নষ্ট করবেন না। সকালে সিপিএম, দুপুরে কংগ্রেস, বিকালে বিজেপি। জগাই মাধাই গদাই। এই তিন দল বাংলায় বোঝাপড়া করে চলছে। এদের কাউকে ভোট দেবেন না।
ইনিউজ ৭১/এম.আর
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।