খাগড়াছড়িতে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী পিঠা উৎসব এবং উদ্যোক্তাদের পণ্য প্রদর্শনী মেলা। এই উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে ‘এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাই-তারুণ্যের উৎসব-২০২৫’ শিরোনামে, যা নারীদের উদ্যোক্তা হিসেবে তুলে ধরার লক্ষ্য নিয়ে চলছে। জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় খাগড়াছড়ি মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর, জাতীয় মহিলা সংস্থা এবং খাগড়াছড়ি নারী উন্নয়ন সংস্থার যৌথ আয়োজনে পৌর টাউন হল প্রাঙ্গণে বুধবার সকাল থেকে উৎসবের আনুষ্ঠানিক পর্দা উঠেছে।
উৎসবের উদ্বোধন করেন খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক এ.বি.এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার। তিনি ফিতা কেটে এবং বেলুন উড়িয়ে উৎসবের সূচনা করেন। এ সময় স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ও পৌর প্রশাসক নাজমুন আরা সুলতানা উপস্থিত ছিলেন। উৎসবে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা, উদ্যোক্তা এবং স্থানীয় জনগণ।
উৎসবের উদ্দেশ্য হলো নারীদের উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচিতি বৃদ্ধি, তাদের পণ্যের প্রচার এবং নতুন উদ্যোক্তাদের অনুপ্রেরণা প্রদান করা। উদ্যোক্তা নারীরা নিজেদের ব্যবসা শুরু করে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রেখে শুধু দারিদ্র্য দূরীকরণে সাহায্য করছে না, বরং কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং নারী ক্ষমতায়নেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করছে।
এই তিন দিনের উৎসবে স্থানীয় ও জাতীয় উদ্যোক্তাদের পণ্য প্রদর্শনী করা হচ্ছে, যেখানে নারীরা তাদের তৈরি পিঠা, মিষ্টান্ন এবং অন্যান্য হস্তশিল্প পণ্য প্রদর্শন করছেন। উদ্যোক্তাদের জন্য এটি একটি বড় সুযোগ, কারণ তারা তাদের পণ্যকে বৃহত্তর জনগণের সামনে তুলে ধরতে পারছেন এবং নতুন ব্যবসায়িক সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারছেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, নারীরা তাদের নিজস্ব উদ্যোগে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। এই ধরনের উৎসব নারীদের উদ্বুদ্ধ করে তাদের ব্যবসা বর্ধিত করার জন্য নতুন দৃষ্টিকোণ তৈরি করতে সহায়ক। উৎসবটি স্থানীয় জনগণ এবং ব্যবসায়ী মহলের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে এবং এটি খাগড়াছড়ির উন্নয়ন প্রকল্পগুলির একটি অংশ হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে।
উদ্যোক্তাদের জন্য পণ্য প্রদর্শনীর পাশাপাশি স্থানীয় ও বিদেশি পণ্যের সাথে সম্পর্ক স্থাপন এবং শিখন-শেখানোর জন্যও প্ল্যাটফর্ম প্রদান করা হচ্ছে। উৎসবের মাধ্যমে নারীরা তাদের সামর্থ্য ও দক্ষতা প্রদর্শন করতে পারছেন, যা তাদের আত্মবিশ্বাসে নতুন মাত্রা যোগ করছে।
এছাড়া, উৎসবের সময় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং কর্মশালা অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যা অংশগ্রহণকারীদের জন্য শেখার এবং বিনোদনের ভালো সুযোগ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এসব কর্মশালায় নারী উদ্যোক্তাদের ব্যবসায়িক দক্ষতা বাড়ানোর জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে।
উৎসবের আয়োজকরা আশা করছেন, এই ধরনের অনুষ্ঠান নারীদের উদ্যোক্তা হিসেবে আরো এগিয়ে নিয়ে যাবে এবং খাগড়াছড়ির অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। নারীদেরকে সম্মানিত এবং সমর্থিত করা হলে, তারা সমাজে আরও বেশি অবদান রাখতে সক্ষম হবে, যা দেশের সামগ্রিক উন্নতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
উল্লেখ্য, এই উৎসবটি খাগড়াছড়ির নারী উদ্যোক্তাদের জন্য একটি বড় প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করছে, যেখানে তারা নিজেদের পণ্য প্রদর্শন করতে এবং নতুন উদ্যোগ সম্পর্কে ধারণা অর্জন করতে পারছেন।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।