বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী জীবন, তার স্ত্রী শাহরিন আক্তার শিল্পী এবং ছেলে সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়ামের বিরুদ্ধে পাঁচ কোটি ৩৭ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও প্রায় ৪৫ কোটি টাকার অস্বাভাবিক লেনদেনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করেছে। রোববার (৫ জানুয়ারি) দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, সৈয়দ আবেদ আলীর নামে ১২টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ২০ কোটি ৮৮ লাখ ১৬ হাজার ৯৭১ টাকা জমা ও ২০ কোটি ৪১ লাখ ৩ হাজার ৭৪১ টাকা উত্তোলনের মাধ্যমে ৪১ কোটি ২৯ লাখ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়া তার ৩ কোটি ৭২ লাখ ৯৯ হাজার ৯৯৭ টাকার জ্ঞাত আয়ের উৎসবহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে।
তার স্ত্রী শাহরিন আক্তার শিল্পীর নামে ১ কোটি ২৬ লাখ ৬৩ হাজার টাকার জ্ঞাত আয়ের উৎসবহির্ভূত সম্পদ এবং ৩ কোটি ৫৬ লাখ ৪০ হাজার ৭৩১ টাকার অস্বাভাবিক লেনদেনের অভিযোগ রয়েছে। অপরদিকে, তার ছেলে সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়ামের বিরুদ্ধে ৩ কোটি ৩০ লাখ টাকার জ্ঞাত আয়ের উৎসবহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
আবেদ আলীর অতীত কর্মজীবন নিয়ে জানা যায়, একসময় কুলি হিসেবে কাজ করতেন তিনি। পরে গাড়ি চালানো শিখে পিএসসিতে চাকরি নেন। তবে চাকরির আড়ালে প্রশ্নফাঁস চক্রের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। এর মাধ্যমে নিজ এলাকায় শিল্পপতি হিসেবে পরিচিত হন।
২০১৪ সালে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তিনি চাকরি থেকে বরখাস্ত হন। ২০২৩ সালের জুলাই মাসে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় তাকে এবং তার ছেলেকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। এ সময় তার সম্পদের অনুসন্ধান শুরু করে দুদক।
মামলায় দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা অনুযায়ী অভিযোগ আনা হয়েছে। এই আইনের আওতায় দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থের উৎস গোপন, স্থানান্তর ও হস্তান্তরের দায়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
২০১৪ সালের নন-ক্যাডার পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস এবং ২০২৩ সালের রেলওয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী পদে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় তার সক্রিয় ভূমিকার তথ্য প্রমাণিত হয়েছে। গত বছরের ৯ জুলাই রাজধানীর শেওড়াপাড়ার নিজ ফ্ল্যাট থেকে তাকে, তার ছেলেকে এবং প্রশ্নফাঁস চক্রের আরও ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।