ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য সংলগ্ন মেট্রোরেলের একটি পিলারে আঁকা শেখ হাসিনার গ্রাফিতিতে শিক্ষার্থীরা জুতা নিক্ষেপ কর্মসূচি পালন করেছেন। সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে তারা এই কর্মসূচির মাধ্যমে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এ সময় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান দেন, যেমন—‘জুতা মারো তালে তালে, খুনি হাসিনার দুই গালে’, ‘ফাঁসি চাই, খুনি হাসিনার ফাঁসি চাই’, ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরও দেব রক্ত’, ‘রক্তের বন্যায় ভেসে যাবে অন্যায়’, এবং ‘দিল্লি না ঢাকা-ঢাকা ঢাকা’। কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা জানান, এই কর্মসূচি তাদের ভেতরের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ।
এর আগে রোববার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নির্দেশে গ্রাফিতির উপরের অংশ মুছে ফেলা হয়। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা শেখ হাসিনার একটি ব্যঙ্গচিত্র আঁকেন। তবে দাবির মুখে পরবর্তীতে আগের গ্রাফিতির নকশাই পুনরায় আঁকা হয়। এই কাজটি করেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি শিমুল কুম্ভকার, চারুকলা অনুষদের ছাত্র ইউনিয়নের সদস্য মৃধা রাইয়ান এবং ছাত্র ফেডারেশনের সাবেক প্রচার সম্পাদক মমিন মুক্তার সবুজ।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, গ্রাফিতি মুছে ফেলার ঘটনা প্রক্টরিয়াল টিমের ‘অনিচ্ছাকৃত ভুল’ ছিল। এ জন্য তারা আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করে। একইসঙ্গে কর্তৃপক্ষ ঘোষণা দেয় যে, ওই পিলারকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘ঘৃণাস্তম্ভ’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হবে। এটি ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার ঘৃণার প্রতীক হিসেবে সংরক্ষিত থাকবে।
শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের আন্দোলন শুধু প্রতীকি নয়; এটি বর্তমান সময়ের অন্যায় ও ফ্যাসিবাদী শক্তির বিরুদ্ধে তাদের দৃঢ় অবস্থানের প্রকাশ। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এমন পদক্ষেপের পরেও শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রশমিত করতে পারছেন না। তাদের মতে, এই ধরনের ঘটনা শিক্ষার্থীদের কণ্ঠরোধের একটি চেষ্টা। তারা দাবি করেন, এমন কর্মসূচি ভবিষ্যতেও চলতে থাকবে যতদিন না গণতন্ত্র ও ন্যায় প্রতিষ্ঠা হয়।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি ও প্রশাসনিক কার্যক্রম নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে। শিক্ষার্থীদের দাবি ও প্রতিবাদে কীভাবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সাড়া দেয়, সেটিই এখন দেখার বিষয়।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।