আশাশুনির সহকারী পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা (অতিঃ দায়িত্ব আরডিও) মোঃ মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, ঘুষ বাণিজ্য, অর্থ আত্মসাৎ, ঋণ বিতরণে অনিয়ম ও কর্মচারীদের মানসিক নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় অফিস কর্মচারীরা, গ্রাম সংগঠক, পরিদর্শক এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্টরা লিখিতভাবে এই অভিযোগ তুলে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক বরাবর আবেদন করেছেন এবং তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
অভিযোগের মধ্যে রয়েছে, মোস্তাফিজুর রহমান বিভিন্ন সমিতি ও ঋণ দানে নিয়মিতভাবে ঘুষ গ্রহণ করেছেন। নতুন সদস্য ভর্তিতে ঘুষ নেওয়া, ঋণ সিলিং বাড়িয়ে বেআইনিভাবে ঋণ প্রদান, পুরনো খেলাপী সদস্যদেরও ঘুষের বিনিময়ে ঋণ প্রদান, এমনকি নিজের ব্যক্তিগত টাকা বিনিয়োগ করে ঋণ দেয়ার মতো গুরুতর অনিয়মে জড়িত থাকার কথা বলা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ রয়েছে, বিভিন্ন কর্মচারীর কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার মাধ্যমে মোটা অংকের টাকা আত্মসাৎ করা এবং ঋণ বিতরণের সময় ব্যাংকে জমা না দেওয়া।
এছাড়া, কিছু কর্মচারী অভিযোগ করেছেন যে, মোস্তাফিজুর রহমান তাদেরকে মানসিকভাবে নির্যাতন করেছেন এবং তাদের উপর অশোভন আচরণ করেছেন। অভিযোগকারী কর্মচারীরা বলেন, তিনি আওয়ামী লীগ পরিবারের সদস্য হওয়ায় তার কাছে কোন কিছু বলার বা প্রতিবাদ করার সাহস পেতেন না। এমনকি, তিনি নিজেকে আইনজীবী পরিচয় দিয়ে অফিসের ভেতরে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন এবং গোপনে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে কাজ করেছেন।
আশাশুনি উপজেলার বিভিন্ন সমিতির সদস্যদের অভিযোগ অনুযায়ী, মোস্তাফিজুর রহমান ঋণের নামে জমা নেওয়া টাকা আত্মসাৎ করেছেন এবং ম্যানেজারদের কাছ থেকে ঘুষ নিয়ে ঋণ বিতরণ করেছেন। উদাহরণ হিসেবে, খেজুরডাঙ্গা কেএসএস এর সদস্য জয়ন্তের ৫০ হাজার টাকা অবিলম্বে ব্যাংকে জমা না দেওয়া এবং অন্যান্য ঋণ বিতরণে অনিয়মের কথাও তুলে ধরা হয়েছে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মোস্তাফিজুর রহমান তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, ‘‘আমি মাত্র আড়াই মাস দায়িত্ব পালন করছি, এর মধ্যে আমি কিভাবে এত বড় দুর্নীতি করতে পারি? কিছু লোক আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।’’
এখন প্রশ্ন উঠেছে, তার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগের সত্যতা কতটা? সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে তার বিরুদ্ধে তদন্ত চালানোর দাবি জানানো হয়েছে। স্থানীয় জনগণ এবং কর্মচারীরা দাবি করছেন, মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে তাকে অপসারণ করা হোক, যাতে প্রতিষ্ঠানটি তার দুর্নীতির কবল থেকে মুক্তি পায়।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।