অবশেষে ভারতে যাচ্ছে ৩ হাজার টন ইলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: শনিবার ২১শে সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৩:২১ অপরাহ্ন
অবশেষে ভারতে যাচ্ছে ৩ হাজার টন ইলিশ

অবশেষে আসন্ন দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে ভারতীয় বাজারে তিন হাজার টন ইলিশ মাছ রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, আবেদনকারীরা রপ্তানির প্রক্রিয়া শুরু করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগে যোগাযোগ করতে পারবেন।


গত কয়েক বছর ধরে দুর্গাপূজার সময় বাংলাদেশ থেকে ভারতে ইলিশ রপ্তানি একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের বাজারে বাংলাদেশের ইলিশের চাহিদা অত্যন্ত বেশি। এবারও পূজার সময় সেই চাহিদা মেটানোর জন্য ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হলো।


এ বছরের শুরুতে, দেশে ইলিশের সরবরাহ বাড়াতে অন্তর্বর্তী সময়ে ভারতে ইলিশ রপ্তানি না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বাংলাদেশ সরকার। এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার মূল কারণ ছিল দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে ইলিশের চাহিদা মেটানো এবং মাছের মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখা। ইলিশ বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় মাছ হওয়ায় এবং এর স্বাদ ও মানের কারণে এটি আন্তর্জাতিক বাজারেও ব্যাপক চাহিদাসম্পন্ন। তবে, সরকারের এ নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতীয় বাজারে ইলিশ রপ্তানির বিশেষ অনুমতি প্রদান করা হয়েছে।


বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, যারা ইলিশ রপ্তানিতে আগ্রহী, তাদের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগে যোগাযোগ করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ আবেদন করতে হবে। সরকার নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে রপ্তানির অনুমোদন প্রদান করবে এবং ইলিশ রপ্তানি করতে ইচ্ছুক প্রতিষ্ঠানগুলোকে মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত নিয়ম মেনে চলতে হবে। 


এছাড়াও, রপ্তানির পরিমাণ, মান নিয়ন্ত্রণ, প্যাকেজিং এবং পরিবহনের নিয়মাবলী সম্পর্কে বিস্তারিত নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে কঠোর মনিটরিং করবে বলে জানিয়েছে, যাতে রপ্তানি প্রক্রিয়া সুষ্ঠু এবং স্বচ্ছ হয়।


পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশের ইলিশের জনপ্রিয়তা অনেক পুরনো। দুর্গাপূজার সময় ইলিশ ভোজন ভারতীয় বাঙালিদের জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রীতি। যদিও ভারতের নিজস্ব বাজারেও ইলিশ পাওয়া যায়, তবে বাংলাদেশের পদ্মার ইলিশের স্বাদ এবং গুণমানকে অত্যন্ত উচ্চমানের মনে করা হয়। ফলে, এই সময়ে ইলিশের চাহিদা ভারতীয় বাজারে দ্রুত বৃদ্ধি পায়। 


বাংলাদেশ থেকে ইলিশ রপ্তানি পশ্চিমবঙ্গের বাজারের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ, কারণ এটি সেখানকার পূজার সময় উপাদান হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিশেষ করে কলকাতা এবং তার আশেপাশের এলাকাগুলোতে এই মাছের চাহিদা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।


বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ইলিশ রপ্তানি একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত হিসেবে বিবেচিত। প্রতিবছর দুর্গাপূজার আগে ভারতে ইলিশ রপ্তানি থেকে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে। এছাড়া, ইলিশ রপ্তানি বাংলাদেশের মাছ রপ্তানি খাতে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে এবং দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ককেও সুদৃঢ় করছে।