প্রকাশ: ৭ জুলাই ২০২০, ১৭:৫
বরিশালের হিজলা উপজেলার মহা বিপদ এবং মহা আতঙ্কের নাম মেঘনা ভাঙ্গন তান্ডব। এক সময়ের আশির্বাদ মেঘনা নদী এখন অভিশাপ হয়ে ভয় দেখাচ্ছে হিজলা উপজেলা বাসীদেরকে। গ্রামের পর গ্রাম বিলীন হচ্ছে রাক্ষুসে এই মেঘনা তান্ডবে।
এখন হিজলা উপজেলাকে সম্পূর্ণ গিলে খাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে ক্ষুধার্ত মেঘনা। মেঘনার তীব্র ভাঙ্গনে দিশেহারা ভাঙ্গন পাড়ের অসহায় মানুষেরা। তারা তাদের চোখের সামনে দেখছে বাবা, দাদার সময়কার ফসলি জমি, ঘর-বাড়ি, কবরস্থান, বাগান, স্কুল, মসজিদ, মাদ্রাসা, রাস্তা-ঘাট সব কিছুই একে একে রাক্ষুসে মেঘনা গিলে খাচ্ছে। এর যেনো কোনো প্রতিকার নেই আছে শুধু হাহাকার, নীরব কান্না আর নীরবে দাড়িয়ে ভাঙ্গন তান্ডব দেখা।
যদিও এই ভাঙ্গন হিজলার দীর্ঘ বছরের জাতীয় সমস্যা। দীর্ঘ বছরে ক্ষমতার পরিবর্তন হলেও নদী বাঁধের ব্যাপারে কারো কোনো মাথা ব্যাথাই লক্ষ্য যায়নি, তাই আজ হিজলা উপজেলা পরিষদ নদীগর্ভে বিলীনের সম্মুখীন। বিশেষ করে হিজলার কয়েকটি অংশের মধ্যে পত্তনীভাঙ্গা, হরিনাথপুর, দূর্গাপুর, কাইমা, পুরাতন হিজলা, বাউশিয়া, আলিগঞ্জ এই রাক্ষুসে মেঘনার শিকার। পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল(অবঃ) জাহিদ ফারুক এমপি প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পাবার পর পরই হিজলার নদী ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করে ছিলেন। ঐ সময় তার সাথে উপস্থিত ছিলেন বরিশাল-৪ এর সংসদ সদস্য পংকজ নাথ। তখন নদী বাঁধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ছিলেন পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী।
কিন্তু ব্যর্থ কন্ঠে বলতে হচ্ছে আজ দীর্ঘদিনও নদী ভাঙ্গন রোধের ব্যাপারে কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। চলতি বছরের প্রথম দিকে হিজলার স্থানীয় জনগণের নিজেদের উদ্যোগে নদী বাঁধের ব্যাপারে এগিয়ে এসেও পিছিয়ে পরেছে। কারণ এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে সরকারি সহযোগিতা ছাড়া এগিয়ে চলা কোনো ভাবেই সম্ভব নয় সাধারণ জনগণের পক্ষে।
তবে নদী ভাঙ্গনের ব্যাপারে যত্রতত্র অবৈধভাবে নদী থেকে বালি উত্তোলন একটি প্রধান কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে যাইহোক বাউশিয়া এলাকায় নদী বাঁধ দেয়া নাহলে হিজলা উপজেলা পরিষদকে রক্ষা করা খুবই কঠিন হবে যাবে। তাই এখনই বাঁধ নির্মাণ বা স্থায়ী ভাঙ্গন রোধ করা না গেলে হিজলা উপজেলা পরিষদ রাক্ষুসে মেঘনা নদীর গর্ভে বিলীন হওয়ার সম্ভাবনা সময়ের ব্যাপার।