প্রকাশ: ১৬ মে ২০২০, ১৮:৩৬
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা চিকিৎসায় প্রথমবারের মতো প্লাজমা সংগ্রহ শুরু হয়েছে। শনিবার করোনা জয় করা দিলদার হোসেন বাদল নামে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেলের একজন চিকিৎসকের প্লাজমা দেয়ার মাধ্যমে প্লাজমা সংগ্রহ শুরু হয়।বাংলাদেশে প্লাজমা থেরাপি প্রয়োগসংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ কমিটির প্রধান ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হেমাটোলোজি বিভাগের অধ্যাপক এম এ খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেছেন, সোহরাওয়ার্দী মেডিকেলের চিকিৎসক দিলদার হোসেন বাদলের প্লাজমা দেয়ার মাধ্যমে প্লাজমা সংগ্রহ শুরু হয়। এখন প্লাজমা দিচ্ছেন স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালের চিকিৎসক পিয়াস। এরপর কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালের আতিয়ার রহমানের প্লাজমা সংগ্রহ করা হবে।ঢামেক হাসপাতালের ব্লাড ট্রান্সফিউশন বিভাগ করোনাজয়ী এই তিন চিকিৎসকের প্লাজমা সংগ্রহ করছে। প্রাথমিকভাবে এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৪৫ জন গুরুতর অসুস্থ করোনা রোগীর ওপর আশা জাগানিয়া ‘প্লাজমা থেরাপি’প্রয়োগ করা হবে।
প্লাজমা থেরাপি’প্রয়োগের বৈজ্ঞানিক গবেষণার (ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল) কাজটি আগামী জুন মাসে শেষ হতে পারে।ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, করোনায় আক্রান্ত গুরুতর অসুস্থ রোগীদের সুস্থ করতে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বহু দেশে প্লাজমা থেরাপির ব্যবহার শুরু হয়েছে। একইভাবে বাংলাদেশের করোনায় আক্রান্ত গুরুতর অসুস্থ রোগীদের সারিয়ে তোলার জন্য প্লাজমা থেরাপি প্রয়োগের জন্য প্রাথমিকভাবে গবেষণা করার (ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল) প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়।
অসুস্থ ব্যক্তির শরীরে করোনাজয়ীর অ্যান্টিবডি প্রয়োগের পর অনেকে সুস্থ হয়ে ওঠায় চীন, ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের অনেক দেশে প্লাজমা থেরাপির প্রয়োগ শুরু হয়েছে। করোনাজয়ীর অ্যান্টিবডি থাকে রক্তের প্লাজমায়। সুস্থ ব্যক্তির দেহ থেকে প্লাজমা সংগ্রহ করে তা করোনায় সংক্রমিত অসুস্থ ব্যক্তির শরীরে প্রয়োগ করা হয় বলে এই চিকিৎসাপদ্ধতির নাম হয়েছে 'প্লাজমা থেরাপি'।
কারণ করোনাজয়ীর অ্যান্টিবডি করোনা রোগীর শরীরে গিয়ে ভাইরাসকে অকেজো করে দেবে। ফলে ফুসফুসে তীব্র সংক্রমণ (একিউট লাং ইনজুরি) হবে না। এসব রোগীর আইসিইউতে নেওয়া লাগবে না। এমনকি ভেন্টিলেশনও দেওয়া লাগবে না। তবে এমন না যে শতভাগ রোগীর ক্ষেত্রে এটা কাজ করবে। করোনার চিকিৎসায় কার্যকর উপায় না থাকায় বিশ্বে প্লাজমা থেরাপির ব্যবহার শুরু হয়েছে।’
প্লাজমা থেরাপির প্রয়োগের অনুমতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনও (এফডিএ)। করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য করোনাজয়ীদের কাছে প্লাজমা দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। এফডিএর প্রতিবেদন বলছে, ‘আপনি যদি করোনাকে পরাজিত করে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে থাকেন, তাহলে আপনি প্লাজমা দান করেন। আপনার প্লাজমায় করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডি আরেকজন করোনা রোগীকে সুস্থ হতে সাহায্য করতে পারে।