প্রকাশ: ১৫ এপ্রিল ২০২০, ১৭:১৬
জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রোগী দেখছেন ডাক্তার তপজীত দত্ত (বাপু)।পুরো বিশ্ব যখন করোনায় আক্রান্ত এমন অবস্থায় দেশের বেশীর ভাগ ডাক্তার জীবন নিয়ে হোম কোয়ারান্টাইনে আছে। তখনি সাধারন মানুষের কথা ভেবে এই ভয়াবহ পরিস্থিতিকে মোকাবেলা করার উদ্দেশ্যে নিজের জীবন বাজি রেখে উপজেলার সদরে উচালিয়া পাড়ার মোড়ে মেসার্স দীপ মেডিকেল হলে প্রতিদিন নিয়মিত রুগি দেখছেন উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ডাঃ তপজিত দত্ত (বাপু)।সরাইলের মানবতার ফেরিওয়ালা ডাক্তার বাপু দত্ত। চিকিৎসা জগতে পা দিয়েই নিজের জীবনটা বিলিয়ে দিয়েছেন মানব সেবায়।
উপজেলায় তিনি গরীবের ডাক্তার নামে পরিচিত । ডাক্তার পেশায় উপজেলার হাজার মানুষের বিনা পয়সায় চিকিৎসা দিয়েছেন। এখনও অব্যাহত রেখেছেন তার মানবতার কাজ। একজন ভালো চিকিৎসক হিসেবে রয়েছে তার সুনাম।বাপু একজন গরীবের ডাক্তার।সরাইল উপজেলার সদর ইউনিয়নের উচালিয়া পাড়ায় হিন্দুধর্মের দত্ত পরিবারে তাঁর জন্ম। বাবা ডাঃ হিমাংশু মোহন দত্ত সরাইলের আলো বাবু বা আলো ডাক্তার নামে পরিচিত।সরাইল উপজেলার সরাইল অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে তপজীত দত্ত বাপুর শিক্ষা জীবন শুরু হয়। ১৯৭৪ সালে ওই স্কুল থেকে কৃতিত্বের সাথে এসএসসি পাশ করেন। ১৯৭৭ সালে ব্রাক্ষণবাড়িয়া সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং ১৯৮৪ কুমিল্লা মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল,মেডিকেল শিক্ষা পাস করেন।
ডাঃ তপজিত দত্ত (বাপু) সাংবাদিকদের বলেন, আমার বাবা ডাক্তার হিমাংশু মোহন দত্ত ওরফে আলো ডাক্তার ,তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের বিভিন্ন হাসপাতালে চাকরি করে অবশেষে সরাইল থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর সিনিয়র মেডিকেল অফিসার হিসেবে চাকুরী শেষ করে আমৃত্যু উনার নিজস্ব বাসভবনে উচালিয়াপাড়া দত্ত বাড়িতে নিরবিচ্ছিন্নভাবে মানুষের সেবা করতে থাকেন নামমাত্র মূল্যে মানুষকে ওষুধ প্রদান বিনা পরীক্ষায় মানুষের রোগ নির্ণয় এভাবে একজন ধন্বন্তরি চিকিৎসক হিসেবে নিবেদিতপ্রাণ হয়ে পর্বত সমান সম্মান যশ, খ্যাতি অর্জন করেন। তিনি আরোও বলেন,
আমার বাবার সাথে আমি সব সময় থাকতাম উনি আমাকে হাতে-কলমে অনেক কিছু শিখিয়ে গেছেন। সেই থেকে আমিও চিকিৎসা সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলাম,এক পর্যায়ে সরকারি চাকরি শুরু করলাম, দিবারাত্রি ডিউটি করে আমার পক্ষে যতটুকু সম্ভব মানুষের সেবা করেছি।তিনি এ প্রতিনিধিকে বলেন, আমার বাবার নির্দেশ ছিল তুমি? সরাইল থেকে বদলি হবে না, এখানে থেকেই মানুষের সেবা করবে,
সেবা দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি।বাবার আদর্শ আমাদের পারিবারিক ঐতিহ্য সব মিলিয়ে আমি আছি মানুষের পাশে।বতর্মানে করোনাভাইরাসকে ভয় করবেন না,শুধু একটু সতর্ক থাকুন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন, নিয়মিত হাত ধোন সর্বোপরি ঘরে থাকুন। তবে এদূর্যোগে রুগিদের সেবা দিতে পেরে আমি নিজেকে গর্বিত মনে করি। পরিশেষে তিনি বলেন, আপনারা সবাই আমার জন্য দোয়া ও আশীর্বাদ করবেন, আমি যেন জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত আমার বাবার মতো আপনাদের সেবা করতে পারি।