করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সারাদেশে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হলেও খবর নেই সেন্টমার্টিন দ্বীপে। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সকল প্রকার জনসমাগম ও পর্যটক আগমনের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলেও সেন্টমার্টিনে এবিষয়ে কোন নিষেধাজ্ঞা জারি হয়নি এখনো। অথচ প্রতিনিয়িত দেশ-বিদেশের হাজার হাজার পর্যটক টেকনাফ উপজেলার সেন্টমার্টিনে ভ্রমনে আসেন। এনিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে করোনা ভাইরাস অতংক দেখা দিয়েছে। বুধবার বিকালে কক্সবাজারে সকল প্রকার জনসমাগম ও পর্যটক আগমনের উপর নিষেধাজ্ঞা জারির খবর শুনে স্থানীয়রা সেন্টমার্টিনেও নিষেধাজ্ঞা জারীর অপেক্ষায় রয়েছে।
১৮ মার্চ (বুধবার) করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে কক্সবাজারে সকল প্রকার জনসমাগম ও পর্যটক আগমনের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে জেলা প্রশাসন। বুধবার বিকাল ৪ টার দিকে জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। জেলা প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের পর বিকেল চারটা থেকে সমুদ্র সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে পর্যটকদের সরে যেতে মাইকিং করা হয়েছে। অপরদিকে, কক্সবাজার জেলায় কোথাও এ পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি পাওয়া যায়নি। তবে ৩ জন বিদেশ ফেরত ব্যক্তিকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।
এদিকে, করোনা ভাইরাস নিয়ে কক্সবাজার জেলাবাসিকে বিভ্রান্ত এবং আতংকিত না হওয়ার পরামর্শ এবং সর্তক থাকতে বলেছেন জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসক সুত্রে আরো জানা যায়, হোটেল-মোটেলসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে জনসমাবেশ, বিনোদন অনুষ্ঠান পরিবেশন সহ সবধরনের জনাসমাগমের উপর নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে। বিতরণ করা হয়েছে সচেতনতামূলক প্রচারপত্র। বুধবার সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা, কলাতলীর ডলফিন মোড় ছোট-বড় যানবাহনসহ বিভিন্ন স্থানে সচেতনতামূলক প্রচারপত্র বিতরণে নেতৃত্ব দেন ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মোঃ মাসুদুর রহমান মোল্লা। এসময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোঃ আমিন আল পারভেজ, জেলা প্রশাসনের সহকারি কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পর্যটকবাহী কেয়ারী সিন্দাবাদের ব্যবস্থাপক শাহ আলম বলেন, করোনা ভাইরাস আতংকে পর্যটকের আগমন কিছুটা কমেছে। জাহাজ চলাচলে এখনো কোন প্রকার নিষেধাজ্ঞা আসেনি। তিনি আরো জানান ১৮ মার্চ বুধবার সকালেও টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনে ৪টি জাহাজে করে ৭শতাধিক পর্যটক ভ্রমনে গেছে। জাহাজ চলাচলের সময় পর্যটকদের জমায়েত যেন না হয় সেদিকে সতর্ক থাকার জন্য ও বলা হয়েছে বলে জানান।
টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. টিটু চন্দ্র শীল বলেন, এ পর্যন্ত টেকনাফে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত কোন রোগী পাওয়া যায়নি। তবে বিদেশ ফেরত টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্যা কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা: সাকিয়া হক যথাযথ ছাড়পত্র নিয়ে টেকনাফে কর্মস্থলে এসে সেল্ফ কোয়ারান্টাইনে রয়েছেন বলে জানান।
টেকনাফ আল্-জামিয়া আল্ ইসলামিয়া’র শায়খুল হাদিস ও মুহতামিম মুফতি মুহাম্মদ কিফায়ত উল্লাহ শফিক বুধবার বাদ আছর মাদরাসা মসজিদে করোনা ভাইরাস হতে মুক্তি পাওয়ার জন্য দোয় ও মোনাজাত করেন। এসময় তিনি মুসল্লীদের উদ্দেশ্যে বলেন, করোনা ভাইরাস এটি একটি গজব। বান্দা যখন গুনাহ করতে থাকে আল্লাহ সতর্কতা মূলক বিভিন্ন রোগ ব্যাধীতে আক্রান্ত করতে পারে। এখান থেকে বাচতে হলে আল্লাহ পাকের দরবারে কান্নাকাটি করে নিজের অপকর্মের জন্য ক্ষমা চাইতে হবে। আল্লাহ মহান, তার কাছে কোন কিছুর অভাব নেই। আমরা ক্ষমা চাইলে তিনি তাঁর মহানুভবতায় ক্ষমা করে দিবেন। তিনি সকলকে নিয়মিত ফরজ নামাজের পাশাপাশি নফল নামাজ, কুরআন তেলাওয়াত, জিকির করে সকল প্রকার বলা মুসিবত হতে রক্ষা পাওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করার জন্য বলেন।
এবিষয়ে যোগাযোগ করা হলে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সাইফুল ইসলাম জানান, সেন্টমার্টিনে জনসমাগম নিষেধ করা হয়েছে। তবে জাহাজ চলাচলের ব্যাপারে এখনো কোন সিদ্ধান্ত আসেনি।
ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।