টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী পৌরশহরে স্কুল শিক্ষক মো. সুলতানুজ্জামান হেলাল (৫০) কে গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে তার অফিস কক্ষে খুন করে লাশ গুম করেছে দুর্বৃত্তরা। তার ব্যবহৃত রক্তাক্ত মোবাইল ফোন উদ্ধার । অফিস কক্ষে রক্তাক্ত মোবাইল উদ্ধার পরিবারের ধারণা তাকে খুন করে লাশ গুম করা হয়েছে।
সে ধনবাড়ী পৌর শহরের নলহরা (নল্যা) বাজারের আরএনজি প্রি-ক্যাডেট স্কুলের পরিচালাক এবং উপজেলার বানিয়াজান ইউনিয়নের বাঐজান গ্রামের মৃত হাসান আলী মন্ডলের ছেলে। সে দুই সন্তানের জনক। পূর্ব শত্রুতার জেরে তাকে হত্যা করে গুম করা হয়েছে বলে ধারণা করছে তার পরিবার। এ ঘটনায় তার পরিবারে চলছে শোকের মাতম।
পুলিশ, নিহতের বড় ভাই আবু বকর সিদ্দিক ও তার ভাতিজরা জানান, বৃহস্পতিবার রাতে সুনতানুজ্জামান হেলাল ধনবাড়ী বাজার থেকে কাঁচা বাজার করে নল্যা বাজারের বিষ্ণুর সেলুনের দোকানের সামনে তার মোটর সাইকেলটি রেখে চা খেতে যায়। দীর্ঘ সময় চলে যাওয়ায় পরও সে ফিরে না আসলে ফোন দেন বিষ্ণু। ফোন বন্ধ পাওয়ায় বিষয়টি পরিবারের সদস্যদের জানান বিষ্ণু।
পরে তার পরিবারের লোকজন এবং বাজারের স্থানীয়রা তাকে খোঁজতে শুরু করেন। খোঁজার এক পর্যায়ে তার স্কুল অফিস কক্ষের মেঝেতে বিভিন্নস্থানে পড়ে থাকা রক্ত, মোবাইল ফোনটি দেখতে পায় পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়রা। তাকে খুন করে গুম করা হয়েছে বলেও ধারণা করছেন এলাকাবাসী।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, সুলতানুজ্জামান হেলাল নলহরা (নল্যা) বাজারের সহর প্রি-ক্যাটেড এন্ড হাই স্কুলে দীর্ঘদিন যাবত শিক্ষকতা করে আসছিলেন। শিক্ষকতা করা অবস্থায় সহর প্রি-ক্যাটেড এন্ড হাই স্কুলের পরিচালক সহর আলীর সাথে শিক্ষার মান নিয়ে ব্যাপক দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। সুলতানুজ্জামান হেলাল ও সহর আলীর সাথ মাঝে মধ্যেই মনো মালিন্য হতো। সেই প্রেক্ষিতে সুলতানুজ্জামান হেলাল সহর প্রি-ক্যাটেড এন্ড হাই স্কুলের পাশেই আরএনজি প্রি-ক্যাডেট স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। কয়েক মাস আগে স্কুলের সাইন বোর্ড লগানো নিয়েও দুজনের মধ্য ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। তাকে দেখে নেয়া হবে বলে হুমকী প্রদান করে সহর আলী। এরই জেরে গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে তার অফিস কক্ষে হেলাল কে খুন গুম করা হয়েছে বলে হেলালের পরিবারের দাবী।
স্থানীয় সাবেক কাউন্সিলর খন্দকার খোরশেদ আলম খসরু ও ইউপি সদস্য আবুল কালম আজাদ জানান, হেলাল স্যার একজন খুবই ভালো মানুষ ছিলেন। কি কারণে তাকে খুন করে গুম করা হয়েছে তা ভেবে পাচ্ছি না। তবে কিছুদিন আগে স্কুলের সাইন বোর্ড সাটানো নিয়ে দুজনের মধ্য ঝগড়া হয় বলে শুনেছি। তবে অন্য কোন কারন বা অন্য কারো সাথে শশ্রুতার কারনে তাকে হত্যা করে লাশ গুম করা হতে পারে তবে এখনো পরিষ্কার ভাবে এর রহস্য জানা যাচ্ছে না। পুলিশ নিখোঁজ হেলালকে জীবিত অথবা মৃত উদ্ধার হলেই পুলিশ তদন্ত করে অসল কারন উদঘাটন করতে পারবে।
স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি হেলাল উদ্দিন জানান, হেলাল মাষ্টার লোক হিসেবে অনেক ভাল শিক্ষানুরাগী মানুষ ছিলেন। হয়ত তাকে পূর্ব শশ্রæতার জের ধরে খুন কওে হত্যা করার পর লাশ গুম করা হয়েছে। পুলিশ প্রশাসনের নিকট আমাদের দাবী অতি দ্রুত তদন্ত করে আসামীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক। সেই সাথে সুলতানুজ্জামান হেলাল এর লাশ উদ্ধার করা হোক।
এ ব্যাপারে সহর প্রি-ক্যাটেড এন্ড হাই স্কুলের পরিচালক সহর আলীর সাথে এব্যাপারে কথা বলার জন্য ব্যবহৃত মুঠোফনে ওযোগাযোগ করা হলে ফোন টি বন্ধ পাওয়া যায়। বাড়ীতে তাকে ও তার পরিবারের কাউকে পাওয়া যায়নি।
ধনবাড়ী থানার ওসি (তদন্ত) আশরাফুল ইসলাম ও এসআই মাজাহার এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, রাতেই খবর পেয়ে এবং আজ সাকালেও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। তাকে হত্যা করে গুম করার ব্যাপারে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে তার পরিবারের দাবী তাকে খুন করে গুম করা হয়েছে এবং থানায় একটি সাধারণ ডায়রী করা হয়েছে।
ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।