
প্রকাশ: ১৬ অক্টোবর ২০১৯, ৩:২৫

জুয়ার আসর থেকে আসামি আটক করে বিপাকে পড়েছেন মোংলা জয়মনি এলাকার নৌ-পুলিশের ওসি। তার বিরুদ্ধে জুয়ার বোর্ড থেকে টাকা গায়েবের অভিযোগ এনেছেন স্থানীয় এলাকাবাসীসহ জনপ্রতিনিধিরা। তবে ওসির দাবি, আটককৃতদের মধ্যে প্রভাবশালীদের স্বজনরা থাকার ফলেই তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার রটানো হচ্ছে।সোমবার (১৪ অক্টোবর) রাত ১টার দিকে মোংলার জয়মনির এলাকার খাদ্য গুদাম সংলগ্ন সিরাজুল আকনের বাড়িতে অভিযান চালায় নৌ-পুলিশের সদস্যরা।
এ সময় জুয়া খেলার আসরে সঞ্জিব গাইন, ছগির শেখ, সিরাজুল আকন, মাসুদ খান, ইস্রাফিল খান, গোপাল অধিকারী, আলামিন শেখ, জাকারিয়া খান ও জালাল খানসহ ৯ জনকে আটক করে তারা। পরদিন মঙ্গলবার সকালে আটককৃত ৯ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের শেষে পাঠানো হয় জেলা কারাগারে। জব্দ তালিকায় দেখানো হয় একশত সত্তর টাকা ও বায়ান্ন পিস তাস।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) জয়মনি থানার ওসি আবুল হোসেন শরীফের বিরুদ্ধে জুয়ার বোর্ড থেকে টাকা আত্মসাৎ করা অভিযোগ আনেন চিলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী আকবর হোসেন। তিনি বলেন, আটক হওয়া আসামির স্বজনদের মাধ্যমে তিনি জানতে পেরেছেন ওই দিন জুয়ার বোর্ডে এক লাখ সত্তর থেকে আশি হাজার টাকা ছিল। ওসি আবুল হোসেন ওই টাকা আত্মসাৎ করেছেন। একই সাথে স্থানীয় জেলেসহ বিভিন্ন পেশার মানুষদের জিম্মি করে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ আনেন নৌ থানার ওসি শরিফের বিরুদ্ধে। ইউপি চেয়ারম্যান আরো জানান, ওসির অনিয়মের অভিযোগ তিনি পুলিশ সুপারকে অবহিত করেছেন।
তবে মোংলা নৌ-পুলিশের ওসি আবুল হোসেন শরিফ জানান, স্থানীয় প্রভাবশালীর এক নিকটাত্মীয়ের একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে জুয়া খেলা হয় দীর্ঘদিন ধরে। বিষয়টি তিনি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও অনেক কর্তাব্যক্তিসহ এলাকার মানুষের অবগত করেছেন। একই সাথে জুয়ার ঘরটি বন্ধের নির্দেশনা ও দিয়েছেন। কিন্তু প্রভাবশালী মহলটি উল্টো জুয়ার আসরটি বন্ধের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন।

বাধ্য হয়ে তিনি (ওসি-আবুল হোসেন শরীফ) অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানের সময় স্থানীয় দুই ব্যক্তিকে সাথে নিয়ে জব্দ তালিকা করা হয়েছে। তবে তার দাবি, তিনি (ওসি) ঘটনাস্থলে পৌঁছালে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে জুয়ার আসর থেকে কয়েক জন পালিয়ে যায়। বেশি টাকা থাকলে হয়তো তারা সেগুলো নিয়ে পালিয়ে যায়। ইউপি চেয়ারম্যানের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, জুয়া খেলার সময় আটক হওয়া ৯ জনের মধ্যে দুইজন চেয়ারম্যান ও প্রভাবশালী এক নেতার নিকটাত্মীয়। তাদের সুপারিশ ছিলো- ওই দুইজনকে ছেড়ে দেয়ার। কিন্তু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে মামলা দায়েরের পর কারাগারে পাঠানো হয়। এ জন্য ইউপি চেয়ারম্যানসহ অন্যরা তার বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছেন।
তবে এ বিষয়ে খুলনা অঞ্চলের নৌ-পুলিশ সুপার দ্বীন মোহাম্মদ জানান, জুয়ার আসর থেকে আসামি আটকের স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান গাজী আকবর হোসেন তাকে আসামির ছাড়ার জন্য অনুরোধ করে ছিলেন। কিন্তু তিনি (পুলিশ সুপার) অপারগতা প্রকাশ করেন। পরে জানতে পারেন ওসি আবুল শরীফের বিরুদ্ধে অভিযোগ। তিনি (পুলিশ সুপার) দাবি করেন, খুলনা অঞ্চলে ১৯টি থানা আর ফাঁড়ি রয়েছে, তার দায়িত্বে সব কটি দুর্নীতিমুক্ত। তবে নিয়মতান্ত্রিক অভিযোগ ফেলে তদন্ত করা হবে।