বরিশালের হিজলা থানা ইন্দুরীয়া মুখের চর গ্রামের প্রবাসীর জমি অবৈধ দখল নিতে জালিয়াত চক্রের জাল-জালিয়াতি ধরা পড়েছে। জালিয়াতি চক্রের নৈপথ্যের গডফাদার ভূমিদস্যু (১) মোঃ নুরু ইসলাম সিকদারসহ, (২) মোঃ শহিদ আঁকন, (৩) মোঃ আহসান উল্লাহ আঁকন, (৪) মোঃ আলতাফ হোসেন। এদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়ায় গত কয়েকদিন যাবৎ এরা পালিয়ে বেরাচ্ছেন। তারা ওই গ্রামের পাকিস্তান প্রবাসীর ১ একর ৩৯ শতাংশ পৈত্রিক ভূমি দখলের অপচেষ্টা করছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন। ওই প্রবাসীর নাম-খলিলুর রহমান। সে ইন্দুরীয় মুখের চর গ্রামের মৃত কাশেম আলী আঁকনের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানায়, ১৯৭১ সালে খলিলুর স্বেচ্ছায় পাকিস্তানে পাড়ি জমান এবং স্ব-পরিবারে সেখানেই থাকেন। দীর্ঘদিন পর ২০১২ সালের জুলাইয়ের প্রথম দিকে আবার জন্মভূমিতে ফিরে আসেন। ২০১২ সালের ১৯ জুলাই তার চাচাতো ভাই আব্দুল হক আঁকনকে তার ওই সম্পত্তি ভোগ দখল ও রক্ষণা-বেক্ষনের দায়িত্ব দিয়ে একটি আম-মোক্তার নামা দলিল করে দেন। ওই দলিলের স্ট্যাম্পের সিরিয়াল নম্বর-স-১১৪৪১৫৯-৬২, নোটারী সার্টিফিকেট নম্বর-৭, তারিখ ২০১২ সালের ১৯ জুলাই। সূত্রে জানা গেছে, খলিলুর আব্দুল হক আঁকনকে তার ১ একর ৩৯ শতাংশ ভূমি ভোগ দখল ও রক্ষণাবেক্ষনের আম-মোক্তার নামা দলিলের বিপরীতে তার থেকে মোটা অংকের টাকা গ্রহণ করেন। এরপর সে ২০১২ সালের জুলাই মাসেই পুনরায় পাকিস্তানে চলে যায়।
এ ঘটনার পর খলিলুর আর দেশে ফিরে আসেননি। পারিবারিক সূত্র জানায়, ২০১৮ সালে পাকিস্তানেই তার মৃত্যু হয়। আব্দুল হক আঁকন তারপর থেকেই প্রবাসী খলিলুরের ১ একর ৩৯ শতাংশ জমি ৭ বছর ধরে ভোগ দখল ও রক্ষণাবেক্ষন করে আসছে। সম্প্রতি খলিলুরের মৃত্যুর সংবাদ চাওর হলে ওই এলাকার ভূমিদস্যু ও জালিয়াত চক্রের হোতা শহীদ, মাসুদ, আলতাফ ও আহসান উল্লাহ ২০১২ সালের ২ জুলাই (পূর্বের তারিখে) একটি ভুয়া ও জাল আম-মোক্তারনামা তৈরি করে আব্দুল হক আকন থেকে ওই সম্পত্তি ছিনিয়ে নেয়ার ষড়যন্ত্র করছে। এমন অভিযোগ খোদ প্রবাসী পরিবারসহ আব্দুল হক আকনের।
তারা আরো জানান, স্থানীয় মৃত নাদের বক্স সিকদারের ছেলে নূর ইসলাম মাস্টার এই জালিয়াতি চক্রের নেপথ্যের গডফাদার। সে আড়ালে থেকে এ সব অবৈধ কর্মকান্ড পরিচালনা করছে। এদের সকলকে আইনের আওতায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে প্রকৃত রহস্য বেরিয়ে আসবে। ওই জালিয়াত চক্রের আম-মোক্তার নামা স্ট্যাম্প, নোটারী সার্টিফিকেট ও খলিলুর এর টিপ স্বাক্ষর গভীর ভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে জাল-জালিয়াতির যথেষ্ট প্রমাণ মিলেছে। তাদের আম-মোক্তার নামা দলিলের স্ট্যাম্পের সিরিয়াল নম্বর (জোড়া-ক) কক-৮২৪৬২৬৭-৭১ কিন্তু ট্রেজারীর তথ্যানুযায়ী ২০১২ সালে (জোড়া-ক) ‘কক’ সিরিয়ালের কোন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প ছাড়া হয়নি।
‘স’ সিরিয়ালে ছাড়ার প্রমাণ পাওয়া যায়। নোটারী সার্টিফিকেটের নম্বর ও তারিখ বিশেষ কালি দ্বারা লেখা যা অস্পষ্ট। পাকিস্তানে বসবাসরত মৃত খলিলুরের স্ত্রী বেগমজান ও তার পুত্রবধূ সালাউদ্দিন এর স্ত্রী রাবেয়া বেগমের সাথে যোগাযোগ করে জানা গেছে, মৃত খলিলুর তার সম্পত্তির আম-মোক্তার নামা আব্দুল হক আকন ছাড়া অন্য কাউকে কখনো দেননি এবং সে আর বাংলাদেশেও যায়নি। এই ব্যাপারে বাদী আব্দুল হক আকনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন আমি আদালতে মামলা করেছি যা হবার আদালতেই হবে।
ইনিউজ ৭১/এম.আর
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।