শিক্ষক-শিক্ষার্থী কেউ চেনে না, তবু দাবি তিনি বুয়েট শিক্ষার্থী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: শুক্রবার ১১ই অক্টোবর ২০১৯ ১২:০৫ অপরাহ্ন
শিক্ষক-শিক্ষার্থী কেউ চেনে না, তবু দাবি তিনি বুয়েট শিক্ষার্থী

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ক্যাম্পাস থেকে এক অপরিচিত ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার সকালে বুয়েট ক্যাম্পাস থেকে তাকে আটক করা হয়। আটক ব্যক্তির দাবি, তার নাম মো. এনামুল মোরশেদ রূপম। তার দেহ তল্লাশি করে একটা মানিব্যাগ পাওয়া যায়। তবে সেটা ছিল সম্পূর্ণ খালি। সেখানে তার কোনো পরিচয়পত্র (আইডি) কিংবা টাকা-পয়সা ছিল না

রূপম বুয়েটের শিক্ষার্থী বলে নিজেকে দাবি করেন। কিন্তু তিনি যে বুয়েটের শিক্ষার্থী তা প্রমাণ করতে পারেননি। একপর্যায়ে রূপম দাবি করেন, তার অ্যাডভাইসর বুয়েটের আরিফ হাসান মামুন নামের এক শিক্ষক। শিক্ষার্থীদের জেরার মুখে তার অ্যাডভাইসরকে ফোন করলে ওই শিক্ষকও তাকে চিনতে পারেননি। নিজেকে একেক সময় একেক ব্যাচের শিক্ষার্থী বলেও দাবি করেছিলেন রূপম।একেক সময় একেক ব্যাচের দাবি করছেন কেন, শিক্ষার্থীরা জানতে চাইলে রূপম বলেন, ‘আমি এই জন্য বলছি যে, যদি যেকোনো একটা ব্যাচে ঢুকতে পারি, তাহলে আমি ভালোভাবে প্রতিবাদ করতে পারব।’ এরপর চকবাজার জোনের এসি সিরাজের হাতে রূপমকে তুলে দেন বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (৯ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত ৩০০ শিক্ষকের সমন্বয়ে এক বৈঠকে তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেন। বৈঠকে হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে বুয়েট ভিসির পদত্যাগসহ ১০ দফা দাবির সাথে সংহতি প্রকাশ করে বুয়েট শিক্ষক সমিতি। রোববার (৬ অক্টোবর) দিবাগত মধ্যরাতে বুয়েটের সাধারণ ছাত্র ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ফাহাদকে শেরেবাংলা হলের দ্বিতীয় তলা থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যান। সোমবার (৭ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্র জানায়, বুয়েটের শেরেবাংলা হলের শিক্ষার্থী, সিসিটিভি ফুটেজ ও আটকদের জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত কয়েকজনের নাম উঠে এসেছে। 

সূত্র জানায়, ফাহাদকে জেরা ও পেটানোর সময় হলের ওই কক্ষে অমিত সাহা, মুজতাবা রাফিদ, ইফতি মোশাররফ ওরফে সকালসহ তৃতীয় বর্ষের আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী ছিলেন। ওই কক্ষে এসে দ্বিতীয় দফায় ফাহাদকে পেটান বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এবং মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী অনিক সরকার, ক্রীড়া সম্পাদক ও নেভাল আর্কিটেকচার অ্যান্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের একই বর্ষের মেফতাহুল ইসলাম জিয়নসহ কয়েকজন। তারা সবাই মেহেদী হাসান রাসেলের অনুসারী। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে গত সোমবার সন্ধ্যার পর চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা করেন আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ্। এ ঘটনায় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকসহ মোট ১৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।