তীব্র সমালোচনার মধ্যে ১৫ আগস্টকে দলীয় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিন হিসেবে পালনের সব ধরনের আনুষ্ঠানিকতা থেকে বেরিয়ে আসল বিএনপি। এই দিন কেক কাটা বছর কয়েক আগেই বাদ দিয়েছিল তারা। এবার বাদ দেওয়া হয়েছে মিলাদও।বিএনপির পাশাপাশি তার সহযোগী ও ভাতৃপ্রতীম সংগঠনগুলোও জাতির জনককে হত্যার দিন কোনো ধরনের জন্মদিনের আনুষ্ঠানিকতা রাখেনি।দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত দলীয় নেত্রীর আরোগ্য কামনায় একদিন পর এবার ১৬ আগস্ট দোয়া মাহফিল হবে বলে আগেই জানিয়েছেন বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী।১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট জাতির জনককে হত্যার দিনটিকে খালেদা জিয়া তার জন্মদিন হিসেবে পালন করে আসছিলেন ৯০ দশক থেকে। তবে এই দিন আদৌ তার জন্ম হয়েছিল কি না, এ নিয়ে বিতর্ক আছে। বিএনপি নেত্রীর জন্মদিন হিসেবে একাধিক তারিখের তথ্য আছে।১৯৯১ সালে বিএনপি নেত্রী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নেয়া তথ্যে রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা বাসসের করা প্রতিবেদনে জন্মদিন হিসেবে ১৯৪৭ সালের ১৯ আগস্টকে জানানো হয়। তবে তার আরও চারটি জন্মদিবস পাওয়া যায়।
# বিএনপি নেত্রী মেট্রিক পারীক্ষার নম্বরপত্রে জন্মতারিখ হিসেবে উল্লেখ রয়েছে ৫ সেপ্টেম্বর, ১৯৪৬।
# বিয়ের কাবিননামায় আছে ১৯৪৪ সালের ৯ আগস্ট।
# ২০০০ সালের ভোটার তালিকার তথ্য বিবরণী ফরমে বিএনপি নেত্রী তার জন্মদিন হিসেবে ১৯৪৬ সালের ১৫ আগস্টের কথা উল্লেখ করেন।
# খালেদা জিয়ার পাসপোর্টে জন্মদিন হিসেবে উল্লেখ আছে ১৯৪৬ সালের ৫ আগস্ট।
১৯৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর বরিশাল-২ আসনের সংসদ সদস্য শহীদুল হক জামালের পরামর্শে ১৫ আগস্ট জন্মদিন পালন শুরু করেন বলে সে সময় গণমাধ্যমে প্রতিবেদন এসেছে। আর এটিই আওয়ামী লীগের তীব্র আপত্তির কারণ।
আওয়ামী লীগের অভিযোগ, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার দিন উৎসব হিসেবে পালন করতে খালেদা জিয়া ‘ভুয়া জন্মদিন’ পালন করেন। এর মাধ্যমে তিনি খুনিদের প্রতি পরোক্ষ সমর্থন জানান।তবে বিএনপি থেকে বেরিয়ে আসা একাধিক ব্যক্তি এই জন্মদিন পালনের সমালোচনা করেছেন। খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে বিএনপির সঙ্গে জোটে যাওয়া কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের নেতা আবদুল কাদের সিদ্দিকীও তাকে অনুরোধ করেছেন এই দিনকে জন্মদিন হিসেবে পালন না করতে।২০১৩ সালে খালেদা জিয়ার সঙ্গে টেলিফোনালাপে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও ১৫ আগস্ট জন্মদিন হিসেবে পালন না করার অনুরোধ করেছিলেন। তবে পরের বছরই তিনি ঘটা করে এদিন জন্মদিন হিসেবে পালন করেন।এই ‘ভুয়া জন্মদিন’ পালনের অভিযোগে বিএনপি নেত্রীর বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। আর দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ড পাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে এই মামলাতেও গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।তবে ২০১৬ সাল থেকে নানা কারণ দেখিয়ে বিএনপি ১৫ আগস্ট কেক কাটেনি। তবে দলীয় কার্যালয়ে এদিন মিলাদের আয়োজন করেছে তারা। তবে এবার তাও করেনি।বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বুধবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘আগামীকাল (১৫ অগাস্ট) নাই। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিনটি আমরা শুক্রবারের দিন করব।’‘বিএনপির উদ্যোগে তার এই জন্মদিন উপলক্ষে পরশুদিন শুক্রবার ঢাকাসহ সারাদেশে দেশনেত্রীর রোগমুক্তি ও দীর্ঘায়ু কামনা করে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।’
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।