পশুর চামড়া দেশের জাতীয় সম্পদ। এ সম্পদ নষ্ট বা ধ্বংস করা রাষ্ট্রীয় অপরাধ বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) সাধারণ সম্পাদক মো. সাখাওয়াত উল্লাহ। বুধবার (১৪ আগস্ট) দুপুরে বাংলানিউজকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।
সাখাওয়াত উল্লাহ বলেন, শুধু সুনামগঞ্জ নয়, চট্টগ্রাম এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে চামড়া ফেলে দিয়েছে ও মাটিতে পুঁতে ফেলেছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরের সৈয়দপুর-শাহারপাড়া ইউনিয়নের সৈয়দপুর হোসাইনিয়া হাফিজিয়া আরাবিয়া দারুল হাদিস মাদ্রাসার লোকজন কোরবানির দিন প্রায় ৮০০ গরু ও ১০০ ছাগলের চামড়াগুলো সংগ্রহ করে। ঈদের দিন চামড়াগুলো তারা বিক্রি করতে পারেনি। পরের দিন তারা বিক্রির জন্য নিয়ে আসার ফলে চামড়ার গুণগতমান নষ্ট হয়ে যায়। বেশির ভাগ চামড়াই নষ্ট এবং পচে যাওয়ায় তারা এগুলো বিক্রি করতে পারেনি। যার ফলে মাদ্রাসার লোকজন চামড়াগুলো মাটিতে পুঁতে ফেলে।
তিনি আরও বলেন, আমরা বিভিন্ন সময়ে বারবার বলেছি, এখন গরমের সময়, কোরবানি দেওয়ার ৬ ঘণ্টার মধ্যে চামড়া বিক্রি করে দেবেন। বিক্রি করতে না পারলে লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করেন। আমরা আপনাদের কাছ থেকে সেই চামড়া সরকার নির্ধারিত দামেই কিনবো। ৬ ঘণ্টার মধ্যে চামড়ার গুণগত মান নষ্ট হয়ে যায়। তখন সেই চামড়া আর কাজে লাগে না। বিটিএ সভাপতি বলেন, পশুর চামড়া এভাবে ধ্বংস করাটা খুবই কষ্টকর। চামড়া আমাদের জাতীয় সম্পদ। তাই চামড়াকে ফেলে দেওয়া বা মাটিতে পুঁতে ফেলা আমাদের কারো কাম্য নয়। আমাদের অনুরোধ, এবার যা ক্ষতি হবার তাতো হয়েই গেছে। তবে ভবিষ্যতে যে আর এমনটা না হয়, সেদিকে সবার লক্ষ্য রাখতে হবে।
চামড়া ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ৬ ঘণ্টার মধ্যে চামড়া বিক্রি বা সংরক্ষণ না করলে পরের দিন চামড়ার সঠিক দাম পাওয়া যায় না। কেউ যদি চামড়া কেনেন, অতি দ্রুত চামড়া বিক্রি করে দেবেন। বিক্রি করতে না পারলে লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করবেন। আমাদের প্রতিনিধিরা সেই লবণ দেওয়া চামড়া সঠিক দাম দিয়েই কিনবে। এক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের চামড়া নষ্ট বা কম দামে বিক্রি বা লোকসানের সুযোগ থাকে না।
বিগত কয়েক বছরের তুলনায় কোরবানির পশুর চামড়া এ বছর ব্যাপক দরপতন হয়েছে। আকার অনুযায়ী গরুর চামড়া ২০০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অনেক কোরবানিদাতা আশানুরূপ দাম না পাওয়ায় পশুর চামড়া বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসায় দান করে দিয়েছেন। আবার ক্ষোভের বসে দেশের অনেক স্থানে চামড়া রাস্তায় ফেলে রেখেছে অথবা মাটিতে পুঁতে ফেলেছে। এর আগে বেলা ১১টার দিকে ধানমন্ডি ৭ নম্বরে নিজস্ব কার্যালয়ে ঈদুল আজহায় চামড়ার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বিটিএ সভাপতি বলেন, আমরা ২০ আগস্ট থেকে চামড়া সংগ্রহ শুরু করবো। সেই সময় চামড়ার বাজার স্থিতিশীল থাকবে। আশা করছি, এ সময়ের মধ্যে সরকার চামড়া রপ্তানির সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।