বাড়ি বাড়ি গিয়ে মাংস সংগ্রহ, বেশি দামে বিক্রি
ঈদুল আজহার দিন রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বসেছে কোরবানির গরুর মাংস বিক্রির অস্থায়ী হাট। আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল ও দরিদ্র মানুষকে কোরবানির মাংস দেওয়া হলেও তারা বিক্রি করে দেন ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীদের কাছে। এরপর তারা সেই মাংস বিক্রি করছে কেজি প্রতি ৬০০ টাকা করে, যা বাজারদরের চেয়েও বেশি।
আজ সোমবার রাজধানীর কারওয়ানবাজার, যাত্রাবাড়ী মাছের আড়ত, হাতিরঝিল, তেজগাঁও, খিলগাঁও, মিরপুর, গাবতলীসহ বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেছে, ছোট ছোট পুটলি বা বস্তায় করে বিক্রি করা হচ্ছে সে মাংস।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীদের কাছে নারী ও পুরুষরা ৩০০ থেকে বিভিন্ন দরে মাংস বিক্রি করছেন। আর সে মাংস ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছে ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন।
কারওয়ান বাজারে শাপলা নামের এক নারী দুই কেজি মাংস ৬০০ টাকায় বিক্রি করেন। তখন তিনি বলেন, ‘কি কনু (বলবো) বাবা। সকাল থেন (থেকে) মাংস টুকাইছি। হামারা (আমরা) গরিব মানুষ। সারা দিনে পাঁচ কেজি মাংস পাইছি। তিন কেজি মাংস বাইত (বাড়িতে) নিয়ে যামু। আর বাকি দুই কেজি ৬০০ টাকায় বেইচ্চি। এ টাকা দিয়া দুই কেজি পোলাউর চাল, চিনি, সেমাই, মসল্লা কিনে বাড়িত নিয়ে খামু। নাতিরা বসে আছে আমার জন্য।’
ইদ্দিস নামের এক বৃদ্ধ গাবতলী মাজার রোডের সামনে কিছু মাংস বিক্রি করতে এসেছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। মাংস কিনার ক্ষমতা নাই। আর কোরবানি তো জীবনে দিতে পারি নাই। বাড়িতে কিছু মাংস নিমু। আর কিছু এখানে বিক্রি করে চাউল আর মসল্লা নিমু।’
কারওয়ানবাজারে ভ্রাম্যমাণ মাংস বিক্রেতা হানিফ জানান, এবার মাংসের দাম বেশি। আমরা গরিবদের কাছ থেকে এগুলো সংগ্রহ করে অন্যদের কাছে বিক্রি করি। অনেক ভালো মানুষ আমাদের থেকে কিনে।’
বাজারদরের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করছেন কেন প্রশ্ন করলে হানিফ বলেন, ‘বাজারের মাংসে ভেজাল আছে। আমাদের মাংসে কোনো ভেজাল নাই। আর এবার যারা বিক্রি করছে, তারাও বেশি দামে বিক্রি করছে। তাই আমাদের বেশি দাম রাখতে হচ্ছে। তবে দাম বেশির কারণে অনেকে দাম-দর করেই চলে যাচ্ছেন।’
হাতিরঝিলে মাংস কিনতে আসা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, আগে কোরবানি দিতাম। কিন্তু সম্প্রতি ব্যবসায়িক ক্ষতির কারণে এখান থেকে মাংস কিনি। কোরবানির মাংসগুলো ফ্রেশ হওয়ায় এখান থেকে কয়েক কেজি কিনে রাখি।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।