বাংলাদেশের আলোকচিত্রী শহিদুল আলম আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ‘ইনফিনিটি অ্যাওয়ার্ড’ লাভ করেছেন। মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার অব ফটোগ্রাফির বার্ষিক অনুষ্ঠানে শহিদুল আলমের হাতে এ পুরস্কার তুলে দেয়া হয়। এবার শহিদুল আলমসহ পাঁচজন এ পুরস্কার পেয়েছেন। মঙ্গলবার নিউইয়র্কের ম্যানহাটনে বিশ্বের আলোকচিত্র ও ভিউজুয়াল সংস্কৃতির শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার অব ফটোগ্রাফির (আইসিপি) ৩৫তম বার্ষিক অনুষ্ঠানে অংশ নেন বিভিন্ন দেশের শিল্পকলা, বিনোদন, ফ্যাশন, আলোকচিত্র, ব্যবসা এবং দাতব্য প্রতিষ্ঠানের চার শতাধিক ব্যক্তি। অনুষ্ঠানে ফটোগ্রাফির বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য পাঁচজনকে পুরস্কৃত করা হয়।
তারা হলেন- জাদি স্মিথ (সমালোচনামূলক লেখা এবং গবেষণা), শহিদুল আলম (বিশেষ উপস্থাপনা); দাউদ বে (শিল্পকলা), জেস টি ডুগান (উদীয়মান শিল্পী) ও রোজালিন ফক্স সলোমন (আজীবন অর্জন)। পুরস্কার গ্রহণ করে শহিদুল আলম বলেন, ‘এ পুরস্কার আমার জন্য গৌরবের, একই সঙ্গে দেশের জন্যও। আমি মনে করি, এ পুরস্কার দিয়ে বাংলাদেশের আলোকচিত্রশিল্পকে আন্তর্জাতিকভাবে সম্মান ও স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে বাকস্বাধীনতার ব্যাপারে যে আন্দোলন গড়ে উঠেছে, দেশের মানুষ যে সংগ্রামী-স্বাধীনচেতা এটি বিশ্বে আজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।’ বাংলাদেশকে মুক্তমনাদের অবাদ ভূমিতে পরিণত করতে ক্যামেরাকে মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছেন মন্তব্য করে শহিদুল আলম আরও বলেন, ‘এ পুরস্কার আমি নিজের জন্য পাচ্ছি না, বাংলাদেশিদের জন্য এটি গ্রহণ করছি।’
অনুষ্ঠানে ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার অব ফটোগ্রাফির (আইসিপি) চেয়ারপারসন কেরিল এস এগলেন্ডার, প্রেসিডেন্ট জেফরি এ রোজেন ও এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মার্ক লুবেল বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে শহিদুল আলমকে ২০১৮ সালে টাইম ম্যাগাজিনের বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব (পারসন অব দি ইয়ার), আলোকচিত্রী, লেখক ও মানবাধিকারকর্মী হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়। শহিদুলের পরিচিতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, আলোকচিত্রশিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার আগে তিনি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কেমেস্ট্রিতে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
১৯৮৪ সালে নিজ দেশে ফেরার পর তৎকালীন সেনাশাসক এরশাদের বিরুদ্ধে আন্দোলনে যুক্ত হন। এর পর সামাজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তিনি গড়ে তোলেন আন্তর্জাতিক মানের প্রতিষ্ঠান দৃক পিকচার লাইব্রেরি, পাঠশালা সাউথ এশিয়ান মিডিয়া ইনস্টিটিউট ও ছবি মেলা ইন্টারন্যাশনাল ফটোগ্রাফি ফেস্টিভাল। শহিদুলের লেখা ‘মাই জার্নি অ্যাজ অ্যা উইটনেস’ সম্পর্কে লাইফ ম্যাগাজিনের কিংবদন্তি সম্পাদক জন মরিস ‘একজন ফটোগ্রাফারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বই’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড, ইয়েল ও স্টানফোর্ড এবং লন্ডনের অক্সফোর্ড ও ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়েও বক্তৃতা করেছেন। ২০১৮ সালে সরকারের দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য শহিদুলকে গ্রেফতার ও নির্যাতন করা হয় বলেও উল্লেখ করা হয়।
ইনিউজ ৭১/এম.আর
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।