নওগাঁয় শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্ত্রীকে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ

নওগাঁয় যৌতুকের দাবি ও কন্যা সন্তান হওয়ায় স্ত্রী দোলন আক্তারকে শ্বাস রোধে হত্যা করার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে স্কুল শিক্ষক আব্দুস ছালাম রিপনের বিরুদ্ধে। গত ২৯মার্চ রাতে নওগাঁ সদর উপজেলার তিলকপুর মাল া গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর পরিবার বাদী হয়ে ৩১ এপ্রিল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযুক্ত আব্দুস ছালাম রিপন সদর উপজেলার তিলকপুর মাল া গ্রামের আলহাজ্ব মুনছুর আলীর ছেলে ও নুরপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। অভিযোগের প্রেক্ষিতে জানা গেছে, বগুড়া আদমদিঘী উপজেলার অন্তাহার গ্রামের অলতাফ হোসেনের মেয়ে দোলন আক্তারের সাথে আব্দুস ছালাম রিপনের গত আড়াই বছর আগে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় মেয়ের পরিবার থেকে চার লাখ টাকা যৌতুক হিসেবে নেন রিপন। এরকিছু দিন পর আবারো যৌতুকের জন্য তার স্ত্রী ও তার পরিবারকে বিভিন্ন ভাবে চাপ সৃষ্টি করেন। কিন্তু তারা পুনরায় টাকা দিতে অপরগতা প্রকাশ করেন।

এ দিকে গত এক বছর আগে তাদের একটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। এ কারণে দোলন আক্তারের স্বামী রিপন-শ্বশুর ও শাশুড়ি তাকে প্রায় পরিহাস ও নির্যাতন করতেন। কন্যা সন্তান জন্ম দেয়া ও যৌতুকের টাকা না পেয়ে বিভিন্ন সময় স্ত্রীকে মারধরও করেন রিপন। ঘটনার দিন রিপন ৫ লাখ টাকা যৌতুকের জন্য আবারো তার স্ত্রীকে চাপ দিতে থাকে এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে কলহের সৃষ্ঠি হয়। এরই এক পর্যায়ে ঘরের দরজা বন্ধ করে দিয়ে রিপন তার স্ত্রী দোলনকে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে মুখে বালিশ চাপা দিয়ে গলা চেপে ধরে। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে দোলনের আত্মচিৎকারে বাড়ির অন্যান্য লোকজনরা দরজা ভেঙ্গে তাকে উদ্ধার করে। পরে দোলনের পরিবারে খবর পৌছালে তারা থানা পুলিশের সহায়তায় ঘটনা স্থলে এসে তাকে উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করে দেন। 

স্থানীয় মাল া গ্রামের মুকুল হোসেন ও খাতিজা বিবি বলেন, গত শুক্রবার রাতে ছালাম তাদের বাড়িতে গন্ডগোলের শব্দ পেয়ে তাদের বাড়িতে ছুটে যাই। সেখানে অনেক লোকজন ছিলেন। আমরা গিয়ে শুনতে পাই আব্দুস ছালাম নাকি তার স্ত্রীকে মেরে ফেলার জন্য মুখে বালিশ চাপা দেয়। তাদের বাড়িতে প্রায় গন্ডগোল হত তবে কি নিয়ে গন্ডগোল হত তা আমাদের জানা নেই। আমরা যতটুকু শুনেছি তাতে টাকা পয়সা নিয়ে তাদের দু’পরিবারের মধ্যে নাকি একটা বিরোধ চলছিল। দোলনের মা সুলতানা পারভিন বলেন, আমার মেয়েকে বিয়ের পর থেকে তারা যৌতুকের জন্য বিভিন্ন ভাবে চাপ দিত। স্কুল শিক্ষক দেখে আমরা চার লাখ টাকা যৌতুক দিয়ে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। পরে সে আবার পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক দাবী করে বিভিন্ন সময় আমার মেয়েকে নির্যাতন করত। তারপর তাদের কন্যা সন্তান হওয়ার পর থেকে তারা আমার মেয়েকে এর জন্য দোষারপ করত বিভিন্ন ভাবে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও মারধর করত। গত তিন দিন আগে আবারো আমার মেয়েকে যৌতুকের জন্য নির্যাতন করে। তাকে মেয়ে ফেলার জন্য মুখে বালিশ চাপা দিয়ে গলা টিপে ধরে কিন্তু আল্লাহ আমার মেয়েকে বাঁচাইছে। আমরা এর সুষ্ঠ বিচার দাবী করছি।