অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে দলটির কার্যক্রম স্থগিত থাকার কারণে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ অংশ নিতে পারবে না। বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন মন্ত্রী ব্যারোনেস জেনি চ্যাপম্যানের সঙ্গে ঢাকার যমুনায় অনুষ্ঠিত দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে তিনি এ মন্তব্য করেন। শুক্রবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রধান উপদেষ্টা জানান, কার্যক্রম স্থগিত থাকার পর নির্বাচন কমিশন আওয়ামী লীগকে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের তালিকা থেকেও বাদ দিয়েছে। তিনি বলেন, গত ১৬ বছরের ‘দুঃশাসনের’ সময় যে বিকৃত তিনটি নির্বাচনে অসংখ্য তরুণ প্রথমবার ভোট দিতে পারেননি, এবার প্রায় ১০ লাখ নতুন ভোটার প্রথমবার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
ইউনূস জানান, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই অনুষ্ঠিত হবে ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন। তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, নির্বাচন হবে অন্তর্ভুক্তিমূলক, অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠু। ভোটার উপস্থিতিও হবে ব্যাপক।
বৈঠকে জুলাই সনদ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি বাংলাদেশের জন্য ‘এক নতুন সূচনা’, যা গত বছরের জুলাই–আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া লাখো মানুষের প্রত্যাশা রূপায়ণ করবে।
দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় নির্বাচন ছাড়াও বাণিজ্য সম্প্রসারণ, অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ, রোহিঙ্গা সংকট, এবং বিমান ও সামুদ্রিক খাতে সহযোগিতা জোরদার নিয়ে আলোচনা হয়। ব্রিটিশ মন্ত্রী চ্যাপম্যান প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বের প্রশংসা করেন এবং জুলাই সনদকে ঘিরে রাজনৈতিক সংলাপের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি অবৈধ অভিবাসন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে নিরাপদ ও বৈধ অভিবাসন প্রক্রিয়া জোরদারের আহ্বান জানান।
প্রধান উপদেষ্টা জানান, বৈধ উপায়ে বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়াতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। রোহিঙ্গা সংকট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শিবিরের তরুণেরা আশাহীন হয়ে বড় হচ্ছে—“রাগান্বিত এবং হতাশ”, তাদের জন্য শিক্ষা নিশ্চিত করা জরুরি।
ঢাকা–লন্ডন বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদার নিয়েও আলোচনা হয়। ইউনূস জানান, উপকূলীয় ও সামুদ্রিক গবেষণার জন্য বাংলাদেশ একটি ব্রিটিশ গবেষণা জাহাজ কিনছে। বৈঠকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, এসডিজি কো-অর্ডিনেটর লামিয়া মোর্শেদ এবং ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক উপস্থিত ছিলেন।