প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৫, ১৬:১৮
রাজধানীর অনিয়ন্ত্রিত রিকশাচালনার অব্যবস্থাপনা দূর করে একটি নিয়মতান্ত্রিক ও আধুনিক গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে নতুনভাবে উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) নকশায় তৈরি ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল শিগগিরই ঢাকার তিনটি গুরুত্বপূর্ণ রুটে পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হচ্ছে। এই পরিকল্পনার মাধ্যমে নগর পরিবহনে শৃঙ্খলা ফেরানোর চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
শনিবার ডিএনসিসি নগর ভবনে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার উপস্থিতিতে এক অনুষ্ঠানে নতুন এই উদ্যোগের বিস্তারিত জানানো হয়। পল্টন, ধানমন্ডি ও উত্তরা—এই তিনটি এলাকায় শুরুতে ব্যাটারিচালিত রিকশা চালু করা হবে। বুয়েটের কারিগরি সহায়তায় নির্মিত এসব রিকশা নগর পরিবহনে নিরাপদ, পরিবেশবান্ধব ও নিয়ন্ত্রিত একটি নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে আসিফ মাহমুদ বলেন, "অব্যবস্থাপনার সুযোগে রিকশাচালকদের চাঁদাবাজি ও হয়রানির শিকার হতে হয়। এই প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা প্রতিটি এলাকার জন্য নির্দিষ্ট সংখ্যক রিকশা নির্ধারণ করব, যাতে শৃঙ্খলা বজায় থাকে এবং চালকেরা নিরাপদে কাজ করতে পারেন।" এই উদ্যোগে অননুমোদিত রিকশা ধীরে ধীরে অপসারণ করে পরিকল্পিত গণপরিবহন চালুর দিকেই অগ্রসর হওয়া হচ্ছে।
ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ জানান, আগস্টের শুরু থেকে রাস্তায় দেখা যাবে নতুন ডিজাইনের এই রিকশাগুলো। এ লক্ষ্যে এক লাখ অটোরিকশা চালককে প্রশিক্ষণ দিয়ে বৈধ লাইসেন্স দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, যাতে রিকশাচালনার মানোন্নয়ন হয়। এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চালকদের দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি জনসচেতনতাও বাড়াবে বলে মনে করা হচ্ছে।
রিকশাগুলোর চার্জিং স্টেশন তৈরির কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। ডিএনসিসির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শুধুমাত্র নির্ধারিত ও অনুমোদিত পয়েন্ট থেকেই এসব রিকশা চার্জ দেওয়া যাবে, যাতে বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলা না ঘটে। পরিবেশবান্ধব এই উদ্যোগে শহরের দূষণ কমবে বলেও আশা করা হচ্ছে।
উদ্যোক্তারা মনে করছেন, যদি পরীক্ষামূলক এই প্রকল্প সফল হয়, তবে রাজধানীর অন্য এলাকায়ও পর্যায়ক্রমে এটি চালু করা যেতে পারে। এতে করে গণপরিবহনের ওপর চাপ কমবে এবং নগর জীবন হবে আরও সুসংগঠিত।
এই প্রকল্পের সফল বাস্তবায়ন ঢাকার রিকশাচালন ব্যবস্থায় একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে, যেখানে শৃঙ্খলা, নিরাপত্তা ও পরিবেশ সুরক্ষার বিষয়টি থাকবে সর্বাগ্রে।