প্রকাশ: ৪ জুন ২০২৫, ১৭:১৭
গুম সংক্রান্ত রিপোর্ট হাতে পেয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এই প্রতিবেদন শুধু ওয়েবসাইটে নয়, বই আকারে প্রকাশ করার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি মনে করেন, গুমের পেছনে থাকা ভয়াবহ ও নির্মম কাহিনিগুলো জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জানানো উচিত। এই প্রতিবেদনকে ঘিরে বিশ্বজুড়ে আগ্রহ তৈরি হয়েছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
৪ জুন সকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গুম কমিশনের প্রতিবেদন গ্রহণ করেন ড. ইউনূস। এ সময় তিনি বিস্ময় ও দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, একেকটি ঘটনা যেন বাস্তব হরর কাহিনি। সমাজের ভদ্রবেশী মানুষ, যাঁরা আমাদেরই আত্মীয় বা পরিচিত, তাঁরাই এসব নির্মমতার সঙ্গে যুক্ত।
ড. ইউনূস বলেন, তিন ফিট বাই তিন ফিটের ঘরে মানুষকে মাসের পর মাস আটকে রাখা হয়েছে। এ অভিজ্ঞতা মানুষের কাছে তুলে ধরা জরুরি। তিনি হরর মিউজিয়াম গড়ে তোলার কথাও বলেন, যাতে মানুষ জানতে পারে অতীতের অন্ধকার দিকগুলো।
প্রতিবেদনে তিন শতাধিক নিখোঁজ ব্যক্তির কথা উল্লেখ রয়েছে, যাঁদের এখনো খোঁজ মেলেনি। পরিবারের সদস্যরা যেন ব্যাংকিং ও অন্যান্য আইনি সুবিধা পেতে পারেন, সে বিষয়ে আইন সংশোধনের পরামর্শ দেন গুম কমিশনের প্রধান।
কমিশন জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ১৮৫০টি অভিযোগ এসেছে, যার মধ্যে ১৩৫০টি যাচাই-বাছাই সম্পন্ন হয়েছে। পুরো সংখ্যা ৩৫০০ ছাড়িয়ে যেতে পারে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, যারা মানবাধিকার রক্ষায় ভবিষ্যতে কাজ করবে, তাদের জন্য এই কমিশনের সদস্যরা অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, সরকার দ্রুত এসব সুপারিশ বাস্তবায়নে কাজ শুরু করবে।
একজন কমিশন সদস্য জানান, কয়েকজন কর্মকর্তা অনুশোচনা থেকে লিখিতভাবে ক্ষমা চেয়েছেন এবং চিঠিগুলো গণভবনে জমা হয়েছে। তৎকালীন সেনাপ্রধান জনসম্মুখে এই চিঠির অস্তিত্ব স্বীকার করেছেন।
প্রতিবেদন জমাকালে উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানসহ গুম কমিশনের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। তাদের কাজের প্রশংসা করে ড. ইউনূস বলেন, হুমকি ও ভয়ের মধ্যে থেকেও তারা মানবাধিকারের পক্ষে সাহসী অবস্থান নিয়েছেন।