দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি বজায় রাখতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনা আলোচনার মাধ্যমে নিরসনের পক্ষে বাংলাদেশ। তবে কাশ্মীর ইস্যুতে সরাসরি মধ্যস্থতার আগে উভয় দেশের আনুষ্ঠানিক অনুরোধের অপেক্ষায় থাকবে ঢাকা।
রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনায় পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এ বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান স্পষ্ট করেন। তিনি বলেন, "আমাদের অঞ্চলের স্থিতিশীলতা রক্ষায় আমরা সর্বদা সচেষ্ট। ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে দীর্ঘদিনের উত্তেজনা আমরা গুরুত্বের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছি।"
উত্তেজনা প্রশমনে বাংলাদেশের সম্ভাব্য ভূমিকা নিয়ে তৌহিদ হোসেন বলেন, "আমরা চাই উভয় পক্ষ আলোচনার মাধ্যমে তাদের বিবাদ মিটিয়ে ফেলুক। তারা যদি আমাদের সহায়তা কামনা করে, তখনই কেবল আমরা ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারি।" তিনি জোর দিয়ে যোগ করেন, "কোনো অবস্থাতেই আমরা আগ বাড়িয়ে উদ্যোগ নেব না।"
এ বিষয়ে বাংলাদেশের কাছে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব আসেনি বলেও জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। তবে তিনি উল্লেখ করেন, "কিছু দেশ আমাদের কাছ থেকে মধ্যস্থতার আশা করছে। আমরা পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব।"
দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে তৌহিদ হোসেন বলেন, "এ অঞ্চলের কোটি কোটি মানুষের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা জরুরি। কোনো বড় ধরনের সংঘাত এখানকার মানুষের জন্য ভয়াবহ পরিণতি বয়ে আনতে পারে।"
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বাংলাদেশের এই সতর্ক ও ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থান আঞ্চলিক কূটনীতিতে তার ভূমিকাকে আরও শক্তিশালী করছে। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ ড. লাইলুফার ইয়াসমিন বলেন, "বাংলাদেশের এই নীতিই বুদ্ধিমানের কাজ। অপরিপক্ক অবস্থায় জড়ালে জটিলতা বাড়ার ঝুঁকি থাকে।"
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ বর্তমানে সার্ক ও অন্যান্য আঞ্চলিক ফোরামে সক্রিয়ভাবে শান্তি প্রক্রিয়াকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। তবে সরাসরি দ্বিপক্ষীয় বিবাদে জড়াতে না চাওয়ার নীতিতে অনড় থাকছে ঢাকা।
উল্লেখ্য, গত কয়েক মাস ধরে জম্মু-কাশ্মীর ইস্যুতে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। সাম্প্রতিক সীমান্ত সংঘর্ষ ও কূটনৈতিক বাকবিতণ্ডা আঞ্চলিক পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে। এমন প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থান আন্তর্জাতিক মহলে ইতিবাচকভাবে গ্রহণযোগ্য হয়েছে বলে জানা গেছে।