সাত কলেজ ইস্যুতে প্রধান উপদেষ্টার জরুরি সভা

সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের দাবি ও আন্দোলন নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এক জরুরি সভা ডেকেছেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে। এতে উপস্থিত থাকবেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস. এম. এ. ফয়েজ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান। সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে তাদের দাবিগুলো পূরণের জন্য আন্দোলন করে আসছে। আজ বিকেলে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের সঙ্গে শিক্ষার্থী প্রতিনিধিরা বৈঠকে বসেন। 

বৈঠক শেষে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী মঈনুল ইসলাম জানান, সরকার ছয় দফা দাবির বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে। কিছু দাবি তাৎক্ষণিক পূরণ করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল পরীক্ষা সময়মতো নেওয়া, ফল প্রকাশের দ্রুততা এবং প্রশাসনিক জটিলতা দূর করা। তিনি আরও বলেন, আগে ঘোষণা করা কর্মসূচি, যেমন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস চলাচলে বাধা এবং নিউমার্কেট থানা ঘেরাও কর্মসূচি, এখন স্থগিত করা হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি আদায়ে আরও সচেতন থাকবে। 

সভায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনার কথা বলেন। শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলন যৌক্তিক এবং এটি সমাধানে সরকার উদ্যোগী। তিনি আরও জানান, দাবি পূরণের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

এদিকে, শিক্ষার্থীদের আন্দোলন সম্পর্কে জানাতে গেলে ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস. এম. এ. ফয়েজ বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি বাস্তবায়ন করা হবে। তিনি পরীক্ষাসূচি নির্ধারণ এবং ফল প্রকাশের ক্ষেত্রে দেরি না করার প্রতিশ্রুতি দেন। অন্যদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, সাত কলেজের ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে কাজ করা হচ্ছে এবং শিক্ষার্থীদের সমস্যাগুলো সমাধানে তিনি দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখবেন। 

সচিবালয়ে বৈঠকের সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সরকার সর্বদা সজাগ। তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো যাতে ন্যায়সঙ্গতভাবে পূরণ হয়, সে বিষয়ে প্রশাসন দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নিয়ে সরকারের কোনো বিরূপ মনোভাব নেই। সরকার শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবিগুলো মেনে নেওয়ার পক্ষে। 

এদিকে, শিক্ষার্থীরা দাবি পূরণ না হলে নতুন কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, দাবি পূরণে আরও দেরি হলে তারা বৃহত্তর আন্দোলনে নামবে। এই আন্দোলন শান্তিপূর্ণ থাকবে, তবে দাবি আদায় না হলে কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে। শিক্ষার্থীরা আশা করছে, সরকার তাদের দাবিগুলো দ্রুত মেনে নেবে এবং আন্দোলনের প্রয়োজন আর হবে না। 

সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে তাদের সমস্যার সমাধান চেয়ে আন্দোলন করছে। তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে দ্রুত ফল প্রকাশ, নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষা নেওয়া এবং প্রশাসনিক জটিলতা দূর করা। শিক্ষার্থীরা বিশ্বাস করে, দাবি পূরণ হলে তাদের শিক্ষাজীবনে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। তবে আন্দোলনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা যেভাবে তাদের সমস্যাগুলো তুলে ধরেছে, তা সমাজের বিভিন্ন মহলে প্রশংসিত হয়েছে।