তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের বিষয়ে বিএনপির কথার টোন আওয়ামী লীগের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে। শুক্রবার বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এমন মন্তব্য করেন। নাহিদ ইসলাম বলেন, এক–এগারো এবং মাইনাস টু-এর প্রসঙ্গটি বিএনপিই রাজনীতির মাঠে এনেছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নিরপেক্ষ সরকারের দাবিকে তিনি এক–এগারো সরকার গঠনের ইঙ্গিত বলে উল্লেখ করেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, অভ্যুত্থান ও আওয়ামী লীগের পতনের পর বিএনপির সমর্থনেই সরকার গঠিত হয়েছিল। মির্জা ফখরুলের নিরপেক্ষ সরকারের প্রসঙ্গে তিনি সন্দেহ প্রকাশ করেন এবং বলেন, দেশি-বিদেশি চক্রান্তের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের সাম্প্রতিক অবস্থানের সঙ্গে বিএনপির বক্তব্যের মিল রয়েছে।
শুক্রবার আওয়ামী লীগের ফেসবুক পেজে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত সরকারকে অনির্বাচিত ও অসাংবিধানিক বলে উল্লেখ করা হয়। নাহিদ ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ আলী আরাফাতও নিরপেক্ষ সরকারের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন। বিএনপির টোন সেই বক্তব্যের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ, যা সন্দেহের জন্ম দেয়।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি মনে করে বর্তমান সরকার কেবল একটি নির্বাচন দেওয়ার জন্য গঠিত হয়েছে। কিন্তু বিচার কার্যক্রম, সংস্কার ও নির্বাচন—সবগুলোই সরকারের অগ্রাধিকার। সরকারের আচরণকে কেন বিএনপি নিরপেক্ষ মনে করছে না, তা তাদের স্পষ্ট করা উচিত।
নাহিদ ইসলাম বলেন, নিরপেক্ষ সরকারের বিষয়ে অভিযোগ থাকলে নির্বাচনের সময় এগিয়ে এলে তা বিবেচনা করা যেতে পারে। তবে প্রশাসনে বিএনপিপন্থী লোকজন থাকলে সেটাও নিরপেক্ষতার জন্য সমস্যা হতে পারে। এ বিষয়ে আলোচনা করার সময় এখনো আসেনি।
তথ্য উপদেষ্টা জানান, নির্বাচনের সম্ভাব্য সময়সীমা এ বছরের শেষ থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্ধারণ করা হয়েছে। এই সময়ে রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে এগিয়ে যাওয়া উচিত। তিনি বলেন, বিচার কার্যক্রম, সংস্কার ও দর-কষাকষি নিয়ে বিএনপির মনোযোগী হওয়া উচিত এবং বিচার কার্যক্রমে সহযোগিতা করা উচিত।
তিনি আরও যোগ করেন, বিএনপি এখন বলছে, নিরপেক্ষ সরকারের প্রয়োজন। অথচ গুম, বিচার কার্যক্রম ও সংস্কার এগিয়ে নেওয়ার সময় তাদের এসব বিষয়ে সহযোগিতা করা উচিত ছিল। এটি সরকারের ওপর রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি করার উদ্দেশ্য হতে পারে।
নাহিদ ইসলাম জানান, যদি কখনো রাজনৈতিক দলে যোগ দেন, তবে তিনি সরকার থেকে পদত্যাগ করবেন। তার মতে, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং ঐকমত্যের ভিত্তিতে কাজ করাই সবার জন্য মঙ্গলজনক।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।