রায়গঞ্জে করতোয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ভবন সংকটে পাঠদান কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার এই বিদ্যালয়টি ২০০২ সালে এলাকার শিক্ষানুরাগীদের উদ্যোগে স্থাপিত হয়। নদীর ধারে প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত হওয়া সত্ত্বেও বিদ্যালয়টি ২০১৯ সালে নিম্ন মাধ্যমিক এবং ২০২২ সালে উচ্চমাধ্যমিক হিসেবে এমপিওভুক্ত হয়। পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী নিয়ে চলছে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম, তবে দীর্ঘদিনেও সরকারি কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া পায়নি।
বিদ্যালয়টি গড়ে তুলতে হয়েছে অনেক চড়াই-উতরাই পার করে। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, গত তিন বছরে জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষায় বিদ্যালয়ের গড় সাফল্যের হার ৯৮%। দরিদ্র শিক্ষার্থীদের শিক্ষার আলো ছড়িয়ে বিদ্যালয়টি এলাকায় বিশেষ পরিচিতি পেয়েছে। বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিদ্যালয়টির ছাত্র-ছাত্রীরা মেধাতালিকায় বারবার প্রথম স্থান অর্জন করছে। উপজেলা পর্যায়ে ক্রীড়া প্রতিযোগিতায়ও বিদ্যালয়টি শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে।
তবে বিদ্যালয়ের ভবন সংকটের কারণে পাঠদানে নানা সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, দুই দশকের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও বিদ্যালয়ের উন্নয়নে সরকারি কোনো বরাদ্দ মেলেনি। শিক্ষানুরাগীদের অর্থায়নে যে কাঠামো তৈরি হয়েছে, তা জোড়াতালি দিয়ে চলছে। পর্যাপ্ত ক্লাসরুমের অভাবে মানবিক, বাণিজ্যিক এবং বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের একই রুমে ক্লাস নিতে হয়। মেয়েদের জন্য কমনরুম না থাকায় আলাদাভাবে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান উন্নত হলেও অবকাঠামোগত সমস্যা দিন দিন প্রকট হয়ে উঠছে। প্রধান শিক্ষক সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রতি আবেদন জানিয়ে বলেন, বিদ্যালয়ের জন্য বহুতল ভবন নির্মাণ অত্যন্ত জরুরি। এটি করা হলে শিক্ষার্থীদের উন্নত পরিবেশে পাঠদান সম্ভব হবে।
রায়গঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জাকির হোসেন বলেন, বিদ্যালয়টির একাডেমি ভবনের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি ইতোমধ্যে উপস্থাপন করা হয়েছে। ভবিষ্যতে বিদ্যালয়টি উন্নয়নের আওতায় আনা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
করতোয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে স্থানীয় অভিভাবকদের মধ্যেও উদ্বেগ বাড়ছে। তাদের মতে, বিদ্যালয়টির ভবন সংকট কাটাতে সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। শিক্ষার উন্নয়নে এলাকাবাসী সরকারের কাছে সহযোগিতা কামনা করছে।
প্রত্যন্ত অঞ্চলের এই বিদ্যালয়টি এলাকায় শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। তবে ভবন সংকট দূর না হলে শিক্ষার মান ধরে রাখা কঠিন হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।