বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত গণহত্যার অভিযোগে ১৩ জন সাবেক মন্ত্রী ও কর্মকর্তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে। শুনানির পর ট্রাইব্যুনাল তাদের গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে। এই ১৩ জনের মধ্যে অন্যতম ছিলেন সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, যিনি সাংবাদিকদের সামনে দুই হাত তুলে দোয়া চেয়ে উপস্থিত সবাইকে অবাক করেন।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে ট্রাইব্যুনাল থেকে একে একে ১৩ আসামিকে পুলিশের প্রিজনভ্যানে নেওয়া হয়। ট্রাইব্যুনালের সামনে এই দৃশ্য এক বিরল চিত্র উপস্থাপন করে, যেখানে আসামিরা একটি বিশেষ পরিস্থিতির মুখোমুখি। পলকসহ অন্য আসামিরা উপস্থিত সাংবাদিকদের দিকে হাত নাড়িয়ে নিজেদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করলেও, পলক মোনাজাতের মতো দুই হাত তুলে দোয়া চান।
এদিন, প্রথমে ট্রাইব্যুনাল থেকে বের হন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী, সাবেক নৌমন্ত্রী শাহজাহান খান, সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দীন চৌধুরী মানিক। শেষে বেরিয়ে আসেন জুনাইদ আহমেদ পলক।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের টিনশেডর এজলাসে এসব আসামি একসঙ্গে বসে ছিলেন। ১২ জন পুরুষ আসামি কাঠগড়ার ভেতরে থাকলেও, সাবেক মন্ত্রী দীপু মনি কাঠগড়ার বাইরেই বসেন। প্রায় দুই ঘণ্টার শুনানির পর আগামী ১৭ ডিসেম্বরের জন্য পরবর্তী শুনানির দিন নির্ধারণ করা হয়। এদিনের শুনানির শেষে চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম বলেন, “এটা একটি শিক্ষা। যারা ফ্যাসিস্ট শাসনের দিকে যেতে চান, তাদের জন্য আজকের দিনটি একটি বার্তা। মানবতাবিরোধী অপরাধ করে ক্ষমতায় স্থায়ী থাকা যায় না, একদিন বিচারের মুখোমুখি হতে হয়।”
আজকের শুনানির জন্য ট্রাইব্যুনালে আসা আইনজীবী, গণমাধ্যমকর্মী এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নারায়ণগঞ্জ কারাগার থেকে প্রিজনভ্যানে সাবেক মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীকে ট্রাইব্যুনালে আনা হয়। এরপর ঢাকার পুলিশ ভ্যানে করে সাবেক মন্ত্রী দীপু মনিকে নিয়ে আসা হয়। ধাপে ধাপে অন্যান্য আসামিরাও আসেন।
এর মধ্যে আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক ৯ মন্ত্রী, বিচারপতি, সচিবসহ ১৩ জনকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়, যা দেশের রাজনীতিতে একটি উল্লেখযোগ্য মুহূর্ত হিসেবে চিহ্নিত হবে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।