এসএসসি পাশ করা শিক্ষার্থীদের স্কুলে মিষ্টি নিয়ে আসতে ফেসবুকে নোটিশ!

নিজস্ব প্রতিবেদক
ইনিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ১৪ই মে ২০২৪ ০৯:৩৬ অপরাহ্ন
এসএসসি পাশ করা শিক্ষার্থীদের স্কুলে মিষ্টি নিয়ে আসতে ফেসবুকে নোটিশ!

জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষায় পাশের পরও ‘মিষ্টি’ কাঁটায় বিদ্ধ হচ্ছে সফল পড়ুয়ারা। বাংলাদেশে এসএসসি পরীক্ষার পর আনন্দ উৎসবে শামিল হতে পড়ুয়াদের উদ্দেশে কার্যত ‘ফতোয়া’ জারি করল এক স্কুল! মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার একটি বেসরকারি বিদ্যালয়ে এসএসসি পাস করা শিক্ষার্থীদের এক কেজি করে মিষ্টি নিয়ে আসার নোটিস দেওয়া হয়েছে। সোশাল মিডিয়ায় এই পোস্ট মুহূর্তের মধ্যেই ভাইরাল। নানা আলোচনা চলছে তা নিয়ে। প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক জানিয়েছেন, বিদ্যালয়ের ‘ঐতিহ্য’ হিসেবে আনন্দ অনুষ্ঠানের জন্য শিক্ষার্থীদের মিষ্টি আনতে বলা হয়েছে। এতে বিতর্কের কিছু নেই।


গত রবিবার বাংলাদেশে এসএসসি এবং সমমানের পরীক্ষার ফলপ্রকাশিত হয়েছে। এর পর সেন্ট মার্থাস উচ্চবিদ্যালয় নামে শ্রীমঙ্গলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির ফেসবুক পেজ থেকে ওইদিনই একটি নোটিস দেওয়া হয়। তাতে বলা হয়েছে, ‘সেন্ট মার্থাস উচ্চবিদ্যালয়ের ২০২৪ সালের এসএসসি (SSC) পরীক্ষায় কৃতকার্য শিক্ষার্থীদের অভিভাবকের অবগতির জন্য জানানো হচ্ছে যে আগামী সোমবার (১৩ মে) পরীক্ষায় কৃতকার্য শিক্ষার্থী, শিক্ষকমণ্ডলী ও বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে আনন্দ অনুষ্ঠান হবে। কৃতকার্য শিক্ষার্থীদের ১ কেজি করে মিষ্টি নিয়ে সকাল ১০টা ২০ মিনিটে বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকতে হবে।’


এই নোটিস অনুযায়ী সফল ছাত্রছাত্রীরা নির্দিষ্ট দিনে মিষ্টি নিয়ে যায় এবং বিদ্যালয়ে আনন্দ অনুষ্ঠান হয়। কিন্তু তাতেও বিতর্কে ইতি পড়েনি। অভিভাবকদের একাংশ এতে ক্ষুব্ধ। কেউ কেউ আবার স্কুলের এই নোটিস নিয়ে হাসাহাসিও করেছেন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সিস্টার রিক্তা গোমেজের কথায়, ‘‘আমাদের স্কুল থেকে এবছর ৬৬ জন এসএসসি (SSC) পরীক্ষায় অংশ নেয়। এর মধ্যে ৬৩ জন পাস করেছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৬ জন। আমরা প্রতি বছরই পাস করা শিক্ষার্থীদের নিয়ে পুরো স্কুলে আনন্দ অনুষ্ঠানের আয়োজন করি। পাশ করা শিক্ষার্থীরা তাঁদের জুনিয়রদের মিষ্টিমুখ করিয়ে যায়। এটা আমাদের স্কুলের ট্র্যাডিশন। সোমবার সবাই আনন্দ নিয়েই মিষ্টি (Sweets) এনেছে। কেউ তো এ বিষয়ে অভিযোগ করেনি। আমরা স্কুলের সবাইকে নিয়ে একটা আনন্দ উৎসব করেছি। মিষ্টি আনার জন্য কাউকে জোর করা হয়নি।’’


তিনি যাই-ই বলুন, এভাবে নোটিস দিয়ে শিক্ষার্থীদের মিষ্টি আনতে বলা একেবারেই নিয়ম নেই। এমনই জানিয়েছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দিলীপ কুমার বর্ধন বলেন, ”শিক্ষার্থীরা পাশ করলে এমনিতেই বিদ্যালয়ে মিষ্টি নিয়ে যায়। এভাবে ফেসবুকে নোটিস দিয়ে মিষ্টি নিয়ে আসার নির্দেশিকা দেওয়া বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ঠিক হয়নি। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি এ ঘটনার লিখিত ব্যাখ্যা দেবেন।”