পবিত্র আশুরা আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক
ইনিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ৯ই আগস্ট ২০২২ ১১:১৮ পূর্বাহ্ন
পবিত্র আশুরা আজ

পবিত্র আশুরা আজ। কারবালার শোকাবহ ও হৃদয়বিদারক ঘটনার স্মরণে দিনটি বিশ্বের মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের কাছে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। ত্যাগ ও শোকের প্রতীকরূপে দিনটি পালন করা হয় মুসলিম বিশ্বে।


স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাংলাদেশেও যথাযোগ্য মর্যাদায় এবং সংক্ষিপ্ত কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিনটি পালিত হবে। আজ সরকারি ছুটি। পবিত্র আশুরা উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।


কারবালার মর্মান্তিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দিবসটি পালন করা হলেও আরও বেশকিছু কারণে দিনটি গুরুত্বপূর্ণ বলে ইসলামি কোনো কোনো বর্ণনায় এসেছে। এতে বলা হয়েছে, এদিনে মুসা (আ.)-এর নেতৃত্বে বনি ইসরাইলকে ফেরাউনের কবল থেকে আল্লাহ রক্ষা করেন।


ফেরাউনকে তার গোটা বাহিনীসহ সাগরে ডুবিয়ে দেন। সম্মানের দিক থেকেও দিনটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এদিন এবং এর আগের বা পরের দিনসহ দুটি রোজা রাখলে আগের একবছরের গুনাহ আল্লাহ মাফ করে দেন বলে হাদিসে এসেছে।


এছাড়া দীর্ঘ বিচ্ছেদের পর এদিন আরাফাতের ময়দানে আদম (আ.) হওয়া (আ.)-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এমন অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা এ দিনে ঘটে বলে বিভিন্ন বর্ণনায় আছে।


ইসলামে এমন গুরুত্বের জন্য দিনটি অত্যন্ত ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পালন করা হয়। হিজরি ৬১ সনের ১০ মহররম (এই দিন) মহানবি মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র ইমাম হোসাইন (রা.) ও তার পরিবার এবং অনুসারীরা সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে অবস্থান নেন।


একপাক্ষিক হামলায় ইরাকের ফোরাত নদীর তীরে কারবালা প্রান্তরে তারা ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে শহিদ হন। কারবালার ঘটনা স্মরণ করে বিশ্বের মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা যথাযোগ্য মর্যাদায় দিনটি পালন করে থাকে।


শান্তি ও সম্প্রীতির ধর্ম ইসলামের মহান আদর্শকে সমুন্নত রাখতে তাদের এই আত্মত্যাগ মানবতার ইতিহাসে সমুজ্জ্বল রয়েছে। কারবালার শোকাবহ এ ঘটনা অর্থাৎ পবিত্র আশুরার শাশ্বত শিক্ষা সবাইকে অন্যায় ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে এবং সত্য ও সুন্দরের পথে চলতে প্রেরণা জোগায়।


পবিত্র আশুরা উপলক্ষ্যে কয়েকদিন ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় আজ তাজিয়া মিছিল বের হবে। এই মিছিলের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও চলাচল নির্বিঘ্ন করতে কিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।


রোববার ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, তাজিয়া মিছিলে দা, ছুরি, কাঁচি, বর্শা, বল্লম, তরবারি, লাঠি প্রভৃতি নিয়ে অংশগ্রহণ করা হয়, যা ক্ষেত্রবিশেষে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টি করে।


এটা ধর্মপ্রাণ ও নগরবাসীর মনে আতঙ্ক, ভীতি সৃষ্টিসহ জননিরাপত্তার জন্য হুমকি। তাছাড়া মহররম মাসে পবিত্র আশুরা উপলক্ষ্যে আতশবাজি ও পটকা ফোটানো হয়, যা ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।


তাজিয়া মিছিলের শুরু থেকে শেষ সময় পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে। দিবসটি উপলক্ষ্যে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক আজ বিশেষ প্রবন্ধ, নিবন্ধ প্রকাশ করবে। বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ বিভিন্ন বেসরকারি রেডিও-টিভি চ্যানেলেও দিনটির তাৎপর্য নিয়ে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার হবে।


প্রধানমন্ত্রীর বাণী : আশুরা উপলক্ষ্যে দেওয়া বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পবিত্র আশুরা অত্যন্ত শোকাবহ, তাৎপর্যপূর্ণ ও মহিমান্বিত একটি দিন। বিভিন্ন কারণে এ দিনটি বিশ্বের মুসলমানদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, পবিত্র ও ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ।


তিনি বলেন, হিজরি ৬১ সালের ১০ মহরম মহানবি হজরত মুহম্মদ (সা.)-এর প্রিয় দৌহিত্র ইমাম হোসেন (রা.) ও তার পরিবারবর্গ কারবালা প্রান্তরে শাহাদতবরণ করেন।