ভারতীয়দের গণপিটুনিতে বাংলাদেশি শ্রমিক হত্যাকান্ডের শিকার

নিজস্ব প্রতিবেদক
জেলা প্রতিনিধি, সিলেট
প্রকাশিত: শুক্রবার ২৫শে অক্টোবর ২০২৪ ১১:২১ পূর্বাহ্ন
ভারতীয়দের গণপিটুনিতে বাংলাদেশি শ্রমিক হত্যাকান্ডের শিকার

সীমান্ত নদী জাদুকাটার ওপারে ভারতীয়দের গণপিটুনির শিকার হয়েছেন বাংলাদেশি শ্রমিক সেখ ফরিদ। গত মঙ্গলবার রাতে এই ঘটনা ঘটলেও, তিন দিন অতিবাহিত হলেও ফরিদের জীবন বা মৃত্যু সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত হতে পারেনি ২৮-সংখ্যক বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন (বিজিবি)।


সেখ ফরিদ সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের লাউরগড় বিওপির বাসিন্দা মগবুল হোসেনের ছেলে। তিনি ও তাঁর সহযোগীরা বারকি নৌকা নিয়ে ভারতীয় সীমানায় পাথর উত্তোলন করতে গিয়েছিলেন। স্থানীয় সূত্র জানায়, ফরিদ এবং অন্যান্য শ্রমিকরা নদীর জিরো লাইন অতিক্রম করার পর ভারতীয় নাগরিকরা তাদের উপর হামলা চালায়। ফরিদকে আটক করে বেধরক পিটুনি দেওয়া হয় এবং দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।


বিজিবির ক্যাম্প কমান্ডার নায়েব সুবেদার কামাল হোসেন জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে তারা বিভিন্ন সূত্র থেকে খবর পেয়েছেন। তবে, ফরিদ জীবিত না মৃত তা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। ফরিদের পরিবারের পক্ষ থেকে বিজিবির কাছে কোনও আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ করা হয়নি।


ফরিদের স্ত্রী তাছলিমা বেগম বলেন, "আমার স্বামীর হত্যাকাণ্ডের খবর শুনে আমি বাকরুদ্ধ। আমাদের চারটি শিশু সন্তান রয়েছে। লাউরগড় বিজিবি ক্যাম্পের পাশেই আমাদের বাড়ি, কিন্তু বিজিবি এখনো কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তিন দিন হয়ে গেল, আমি জানি না আমার স্বামীর লাশ কোথায়।"


উল্লেখ্য, ফরিদের সঙ্গে থাকা অন্যান্য শ্রমিকরা নদী পার করে পালিয়ে এসে ঘটনাটি জানিয়েছেন। তবে বিজিবির পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত ফরিদের দেহ ফিরিয়ে আনার কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।


সুনামগঞ্জ ২৮-বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল জাকারিয়া কাদিরের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন গ্রহণ করেননি। এদিকে, স্থানীয় জনগণ এবং ফরিদের পরিবার প্রশাসনের কার্যক্রমের প্রতি হতাশা প্রকাশ করেছেন এবং দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি করেছেন।


এ ঘটনা সীমান্তের নিরাপত্তা এবং জনগণের জীবনের নিরাপত্তার প্রশ্নে নতুন করে আলোচনার সূচনা করেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি জনগণের দাবি, এ ধরনের হত্যাকাণ্ড বন্ধ করতে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।