প্রকাশ: ৩০ জুলাই ২০২৫, ১১:৮
রায় জালিয়াতির মামলায় দেশের সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে ৭ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। বুধবার (৩০ জুলাই) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এই রিমান্ডের আদেশ দেন। সকালেই তাকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আদালতে হাজির করা হয়।
সিএমএম আদালতে হাজিরের পর পুলিশ তার ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে। শুনানিতে উভয় পক্ষের বক্তব্য গ্রহণ শেষে বিচারক ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এ সময় আদালতপাড়ায় সাধারণ মানুষ ও সংবাদকর্মীদের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।
এর আগে গত ২৪ জুলাই ধানমন্ডির নিজ বাসা থেকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল এ বি এম খায়রুল হককে গ্রেপ্তার করে। পরে যাত্রাবাড়ী থানায় দায়ের করা একটি হত্যা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হয়। আদালত সেদিন তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এই প্রথমবারের মতো দেশের ইতিহাসে কোনো সাবেক প্রধান বিচারপতিকে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ও জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। ফলে বিষয়টি জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে এবং বিচার বিভাগের ওপর জনগণের আস্থার প্রশ্নও সামনে এসেছে।
খায়রুল হক দেশের ঊনবিংশতম প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার বিরুদ্ধে বহুদিন ধরেই বিভিন্ন মহলে রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব, বিতর্কিত রায় প্রদান এবং সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ করার অভিযোগ ছিল।
তবে এতোদিন এসব অভিযোগ শুধু কথার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকলেও এবার তা আইনি প্রক্রিয়ায় রূপ নিচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের বিচারব্যবস্থায় এটি এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত, যেখানে বিচারপতিরাও আইনের ঊর্ধ্বে নন—এটাই প্রমাণিত হচ্ছে।
ঘটনাটির পর সামাজিক ও রাজনৈতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ বলছেন এটি বিচার বিভাগের শুদ্ধিকরণ প্রক্রিয়ার সূচনা, কেউবা এটিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেও অভিহিত করছেন।
পুলিশ বলছে, তারা মামলার তদন্তে স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা বজায় রাখবে এবং এই রিমান্ডে থাকা সময়ে বিস্তারিত তথ্য বের করার চেষ্টা চলবে। আদালতের নির্দেশ মোতাবেক তাকে নির্ধারিত সময় শেষে আবারও হাজির করা হবে।