প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২৫, ১৫:৩৭
রাজধানীর মগবাজার থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালকে। বুধবার দুপুরে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একটি দল তাকে গ্রেপ্তার করে। ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, দুপুর ২টার দিকে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়। এই গ্রেপ্তারের পর দেশে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে।
গত ২২ জুন মধ্যরাতে তাকে গ্রেপ্তারের গুজব ছড়ালেও তখন তা নিশ্চিত করা হয়নি। তবে আজকের এই ঘটনা সেই গুজবেরই বাস্তব রূপ বলে অনেকেই মনে করছেন। হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন ইতিমধ্যেই নানা বিতর্ক ও সমালোচনার জন্ম দিয়েছিল। বিএনপি ও বিরোধীদলীয় জোটের বর্জনে অনুষ্ঠিত হওয়া ওই নির্বাচনে শরিক দল জাতীয় পার্টিকে কয়েকটি আসনে ছেড়ে দেওয়া হয়। নির্বাচনে মূলত আওয়ামী লীগ ও দলের বিদ্রোহীদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়, যার কারণে অনেকে একে ‘আমি আর ডামি’ নির্বাচন বলে আখ্যা দেন।
হাবিবুল আউয়ালের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনে ছিলেন চারজন কমিশনার—অবসরপ্রাপ্ত সচিব মো. আলমগীর, আনিছুর রহমান, বিচারক রাশেদা সুলতানা এবং সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসান হাবীব খান। এই কমিশন নিয়ে শুরু থেকেই বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন ও সন্দেহ ছিল। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক না হওয়ায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও হতাশা প্রকাশ করেছিল।
এদিকে মাত্র তিন দিন আগেই ২২ জুন উত্তরা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় আরেক সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদাকে। ফলে মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে দুই সাবেক সিইসি গ্রেপ্তারের খবরে প্রশাসন, রাজনীতি এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে নানা প্রশ্ন উঠছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ধারাবাহিকতা বর্তমান ক্ষমতাসীন মহলের জবাবদিহিতার বার্তা হিসেবে প্রতীয়মান হলেও এর পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে কি না, তা নিয়েও তৈরি হয়েছে জোর আলোচনা। আগামীর রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এবং নির্বাচন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই।