বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জন্ম না হলে বাংলাদেশের জন্ম হতো কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামাল। শনিবার বিকেলে ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলা বিএনপির কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, শহীদ জিয়াউর রহমান শুধু স্বাধীনতার ঘোষণা দেননি, বরং নেতৃত্বহীন জাতিকে নেতৃত্ব দিয়ে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বপ্ন পূরণ করেছিলেন।
রফিকুল ইসলাম জামাল অভিযোগ করেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় শেখ মুজিবুর রহমান তার পরিবারকে পাকিস্তানের কাছে সুরক্ষিত রেখে দেশ থেকে পালিয়ে যান। তিনি বলেন, ৭ই মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা দিলে হয়তো এত রক্তপাত হতো না। কিন্তু তখন জিয়াউর রহমানই প্রকৃত নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তিনি দাবি করেন, শেখ মুজিব একদলীয় শাসনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং বর্তমানে তার কন্যা শেখ হাসিনা দেশকে ফ্যাসিস্ট শাসনের দিকে নিয়ে গেছেন।
তিনি আরও বলেন, গত ১৭ বছরে বিএনপি এবং এর নেতাকর্মীদের ওপর নানা ষড়যন্ত্র ও নির্যাতন চালানো হয়েছে। ৭০০ জন নেতাকর্মী এখনও নিখোঁজ, ২০ হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, আর লক্ষাধিক মামলায় ৬০ লাখ নেতাকর্মীকে জেলে পাঠানো হয়েছে। এত ষড়যন্ত্রের মধ্যেও বিএনপি গণতন্ত্রে বিশ্বাসী থেকে মানুষের অধিকার রক্ষার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।
বিএনপির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক বলেন, শহীদ জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় থেকেও নিজের পরিবারের জন্য রাজনীতি করেননি। ঢাকা শহরে তার পরিবারের কোনো বাড়ি নেই। কিন্তু শেখ হাসিনার পরিবারের নামে ঢাকায় অনেক সম্পত্তি রয়েছে। তিনি বলেন, জিয়া পরিবার দেশের মানুষের জন্য কাজ করেছে, কিন্তু আওয়ামী লীগ নিজের স্বার্থে সম্পদ লুট করেছে।
কর্মী সমাবেশে বিএনপির স্থানীয় নেতৃবৃন্দের ওপর ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তোলেন রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, রাজাপুরে বিএনপির নেতাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে, কিন্তু এসব ষড়যন্ত্র কখনো সফল হবে না। যারা ষড়যন্ত্র করছে, তাদের জন্য বঙ্গোপসাগরই শেষ গন্তব্য হবে।
সমাবেশে রাজাপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট তালুকদার আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে ও যুবদলের সদস্য সচিব সৈয়দ নাজমুল হক এবং ছাত্রদলের সদস্য সচিব রফিক মৃধার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন দলের কেন্দ্রীয় নেতারা। প্রধান বক্তা ছিলেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নাসিম উদ্দিন আকন।
সভায় বক্তারা বলেন, আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনামলে দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংসের মুখে পড়েছে। বিডিআর হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনাগুলো দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রতি বড় আঘাত। শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় থেকে ভারতের তাবেদারি করছে এবং দেশের সম্পদ লুটপাট করছে।
উপজেলা বিএনপির নেতারা তাদের বক্তব্যে দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং জনগণের অধিকার রক্ষার আন্দোলন ত্বরান্বিত করার আহ্বান জানান। তারা বলেন, বিএনপি সব সময় জনগণের স্বার্থে কাজ করে এবং এদেশের মানুষই বিএনপির প্রকৃত শক্তি।
সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, কৃষক দল এবং মহিলা দলের নেতৃবৃন্দ। বক্তারা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ওপর জোর দেন।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।