যুক্তরাষ্ট্রে বন্ধ টিকটক, ব্যবহারকারীরা হতাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার ১৯শে জানুয়ারী ২০২৫ ১১:১২ পূর্বাহ্ন
যুক্তরাষ্ট্রে বন্ধ টিকটক, ব্যবহারকারীরা হতাশ

যুক্তরাষ্ট্রে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টিকটক বন্ধ হয়ে গেছে। এখন অ্যাপল এবং গুগলের অ্যাপ স্টোরেও এটি আর পাওয়া যাচ্ছে না। রোববার বিবিসি জানায়, মার্কিন নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগেই টিকটক যুক্তরাষ্ট্রে কাজ করা বন্ধ করে দেয়। মার্কিন ব্যবহারকারীরা অ্যাপে প্রবেশের চেষ্টা করলে একটি বার্তা দেখানো হচ্ছে, যেখানে লেখা, টিকটকে নিষেধাজ্ঞা চালু হয়েছে, ফলে এটি আর ব্যবহার করা যাবে না।  


টিকটক জানিয়েছে, তারা আশাবাদী যে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নতুন দায়িত্ব নেওয়ার পর টিকটক পুনরায় চালুর জন্য কাজ করবেন। যদিও প্রতিষ্ঠানটি নিশ্চিত করেছে, অ্যাপটি পুনরায় চালু করার জন্য এখনো তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছে।  


শুক্রবার টিকটকের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, যদি জো বাইডেন প্রশাসন শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না করে, তাহলে রোববার থেকে যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক বন্ধ হয়ে যাবে। সেই পূর্বাভাস সত্যি হলো। 


যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের ১৭ কোটিরও বেশি ব্যবহারকারী রয়েছে, যা দেশটিতে এর জনপ্রিয়তার পরিচয় দেয়। তবে দীর্ঘদিন ধরেই মার্কিন প্রশাসন অ্যাপটির চীন-ভিত্তিক মালিক প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্সকে নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে আসছিল। তাদের দাবি, চীন সরকার টিকটকের মাধ্যমে মার্কিন নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ করতে পারে। যদিও বাইটড্যান্স এবং চীন সরকার বরাবরই এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।  


মার্কিন আইনপ্রণেতারা বলছেন, জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থেই টিকটকের বিরুদ্ধে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবে সমালোচকরা বলছেন, এটি শুধুই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। অনেক টিকটক ব্যবহারকারীও সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছেন এবং তাদের প্রিয় অ্যাপটি ফিরে পাওয়ার আশায় রয়েছেন।  


বিশ্লেষকদের মতে, টিকটক যুক্তরাষ্ট্রে বন্ধ হওয়া শুধুই প্রযুক্তিগত বিষয় নয়, বরং এটি চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে দ্বন্দ্বের অংশ। যুক্তরাষ্ট্র চীনের প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি আরও কঠোর হচ্ছে এবং টিকটকের নিষেধাজ্ঞা তারই বহিঃপ্রকাশ।  


এদিকে, টিকটক ব্যবহারকারীদের হতাশা বাড়ছে। কেউ কেউ বলছেন, এটি শুধু বিনোদনের মাধ্যম নয়, বরং অনেকের আয়ের উৎস। টিকটক বন্ধ হওয়ায় তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন।  


বিশ্বজুড়ে এই নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়া বিশ্লেষণ করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, এটি প্রযুক্তি এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত।