লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ফরহাদ মজহার বলেছেন, “আইন ও রাজনীতির সম্পর্ক আমরা বুঝি না বলে এবারের গণঅভ্যুত্থান ব্যর্থ হয়েছে।” শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে সেন্টার ফর ডেমোক্র্যাসি অ্যান্ড পিস স্টাডিজ আয়োজিত ‘দুর্নীতি ও রাষ্ট্রপতি বা সংস্কার’ শীর্ষক গোল টেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
ফরহাদ মজহার আরও বলেন, “ব্যর্থ হওয়াটা জরুরি ছিল, যাতে আমরা আমাদের অজ্ঞতা ও বেহুঁশ অবস্থা টের পাই। এটা আমাদের ভুল দিকে নিয়ে যাবে।” তিনি প্রশ্ন করেন, “আমরা বারবার সংস্কারের কথা বলছি, কিন্তু আপনি তো বাড়ি গঠন করেননি, সংস্কার কীভাবে করবেন?”
তিনি গণতন্ত্রের প্রসঙ্গে বলেন, “আমরা গণতন্ত্রের কথা বলি জনগণকে উপেক্ষা করে। গণঅভ্যুত্থানের পরেও জনগণকে উপেক্ষা করাটা অদ্ভুত। এত মানুষ শহীদ হয়ে গেছে, এত মানুষ পঙ্গু হয়ে পড়েছে, তারপরও আমরা জনগণকে উপেক্ষা করেছি।”
ফরহাদ মজহার রাষ্ট্রচিন্তা নিয়ে আলোচনা করে বলেন, “সংবিধান শব্দটা সঠিক নয়। এটি ঔপনিবেশিক শক্তি ব্যবহার করে তৈরি হয়েছে। যাদের শাসন করবে, তাদের শাসন করার জন্য আইন প্রণয়ন করা হয়।” তিনি উল্লেখ করেন, “গণতন্ত্রে শাসিত ও শাসক বলে কোনো পার্থক্য থাকতে পারে না। গণতন্ত্রে জনগণ তার শাসক।”
৭২ সালের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আপনি যাদের পাকিস্তানের গঠনতন্ত্র বানানোর জন্য ভোট দিয়েছেন, তারাই স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়ন করেছে। তারা যে মতাদর্শ চাপিয়ে দিয়েছে, সেটাকে আমরা ফ্যাসিজম বলি। এটি আমাদের ওপর চাপিয়ে দিয়ে এত বছর শাসন করা হয়েছে।”
অবশেষে তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ বোঝানোর চেষ্টা করেছে, আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করেছি। অথচ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিল সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ন্যায়বিচার।”
বৈঠকে অংশগ্রহণকারী অন্যান্য বক্তারা দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, দুর্নীতি এবং রাষ্ট্র সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার ওপর আলোকপাত করেন। তাঁরা সকলেই একমত হন যে, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য জনগণের অংশগ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।