কুমিল্লা দেবীদ্বার উপজেলার সবচেয়ে ব্যস্ততম সড়ক ‘দেবীদ্বার-চান্দিনা রোড’টি এখন যেন এক মূর্তিমান জনদুভোর্গের নাম। জনদুর্ভোগ বাড়াতেই যেন পিচ ঢালা সড়কটির পাথরের ঢালাই উল্টে ফেলে বসানো হচ্ছে ইট-বালির সলিং। ১৮ ফুটের পিচের সড়ক কেটে করা হচ্ছে ১২ ফুট। সড়কটি কেটে সংকুচিত করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। তারা মনে করছেন এতে পথচারীদের দুভোর্গ কমার চেয়ে দ্বিগুণ বৃদ্ধি পাবে।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, দেবীদ্বার থেকে পার্শ্ববর্তি চান্দিনা উপজেলা সহ রাজধানী ঢাকায় যাওয়া আসার জন্য এই সড়কটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পিচের রাস্তা কেটে ইটের সলিং করায় এতে যানজট যেমন বাড়বে, জন দুভোর্গও বাড়বে। এটি জনগণের সাথে তামাশা ছাড়া আর কিছুই না।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়কের পিচের কার্পেটিং তুলে বালু ও ইটের সলিং দেওয়া হচ্ছে। সড়কটির পাশে সরকারি খাদ্য গুদাম ও একটি সার এবং কৃষি বীজের গুদাম থাকায় প্রতিদিন আন্ত:জেলা ট্রাক এ রোড দিয়ে আসা যাওয়া করে। এছাড়াও এ সড়কের পাশে তিনটি হাসপাতাল ও একটি সিএনজি স্ট্যান্ড রয়েছে। এ রোডটি গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় ট্রাক ও অন্যান্য যানবাহন আসা যাওয়ার সময় দীর্ঘ যানজটের আশংকা করছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
স্থানীয় ব্যবসায়ী কাজী ফরহাদ জানান, মানুষ সারা জীবন দেখেছে সড়কে ইটের সলিং তুলে পিচের রাস্তা করতে, আর এখানে তার উল্টোটাই হচ্ছে। সবচেয়ে ব্যস্ততম দেবীদ্বার-চান্দিনা সড়কে পিচের রাস্তা তুলে ইটের সলিং এর কাজ হচ্ছে। এটি হাস্যকর।
ওই সড়কে চলাচলকারী মো. আবদুল হান্নান বলেন, ইটের সলিং একটি প্রাচীন পদ্ধতি। ইট-বালির সলিং সড়কটি সংকুচিত করায় বর্ষায় খানা-খন্দ আর জলাবদ্ধতা দেখা দিবে। দীর্ঘ যানজট সৃস্টি হবে, এতে মানুষের দুর্ভোগ কমার চেয়ে আরো বাড়বে।
ঠিকাদার মো. নাছির উদ্দিন বলেন, সড়কটি নিচু হওয়ায় ইটের সলিং করা হচ্ছে ৬/৭ মাস পর ঢালাই করা হবে। আপনি আমাদের ওপরে কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলুন, আমরা এর বেশি কিছু জানিনা।
খবর পেয়ে সোমবার দুপুরে পরিদর্শনে এসে দেবীদ্বার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আবুল কালাম আজাদ সাংবাদিকদের বলেন, আমি সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীর সাথে কথা বলেছি। এটি একটি জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। এ রাস্তাটি আরও সম্প্রসারণ করা হবে। এছাড়াও তিনি সড়ক সম্প্রসারণ না হওয়া পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখতে বলেন।
কুমিল্লা সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. নাজমুল হোসাইন সাকিব বলেন, ইটের সলিংয়ের কাজটি স্থায়ী কাজ নয়, টেম্পরারী ভাবে করা হচ্ছে। আগামী ৬ মাস পর আবার নতুন করে টেন্ডার হলে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দিয়ে ঢালাইয়ের কাজ করা হবে। তবে এটি প্রসেসিং হতে আনুমানিক এক দেড় বছর সময় লেগে যেতে পারে। তিনি আরও বলেন, প্রায় ৯৯ লক্ষ টাকা ব্যয়ে দেবীদ্বার-চান্দিনা সড়কটি নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। এর মধ্যে দেবীদ্বার অংশটুকুর ৬০০ মিটার ইটের সলিংয়ে করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।