প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২১:১৫
নরওয়ে-ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর) জানিয়েছে, চলতি বছরে ইরানে মাত্র নয় মাসেই বিভিন্ন ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত অন্তত এক হাজার মানুষের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। সংস্থাটি এই ঘটনাকে ‘‘গণহত্যার অভিযান’’ বলে উল্লেখ করে এর নিন্দা জানিয়েছে।
আইএইচআরের মতে, ইরানে শুধু গত সপ্তাহেই অন্তত ৬৪ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। গড়ে প্রতিদিন ৯ জনেরও বেশি মানুষকে ফাঁসি দেওয়া হচ্ছে। চলতি বছরের আরও তিন মাস বাকি থাকলেও মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের এই সংখ্যা ইতিহাসের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।
সংস্থাটি ২০০৮ সাল থেকে ইরানে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের তথ্য সংরক্ষণ করছে। ২০২৪ সালে সেখানে ৯৭৫ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল। এবার সেই রেকর্ডও ছাড়িয়ে গেছে।
মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর ১৯৮০ ও ১৯৯০-এর দশকের শুরুর দিকেও বিপুলসংখ্যক মানুষের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছিল। তবে গত তিন দশকে এত ব্যাপক সংখ্যক মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের নজির আর দেখা যায়নি।
আইএইচআরের পরিচালক মাহমুদ আমিরি-মোগাদ্দাম বলেন, গত কয়েক মাসে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের কারাগারগুলোতে ‘‘গণহত্যার অভিযান’’ চালানো হচ্ছে। আন্তর্জাতিক মহলের কার্যকর প্রতিক্রিয়া না থাকায় প্রতিদিন মৃত্যুদণ্ডের ঘটনা বেড়েই চলেছে।
আগামী সপ্তাহে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের সঙ্গে বিভিন্ন দেশের নেতাদের সাক্ষাতের সম্ভাবনা রয়েছে। সেখানে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হওয়ার পাশাপাশি মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের বিষয়টি আলোচ্যসূচিতে রাখার আহ্বান জানিয়েছে আইএইচআর।
আমিরি-মোগাদ্দাম বলেছেন, ইরানে চলমান মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ঘটনা মানবতাবিরোধী অপরাধের শামিল। যেসব দেশ মানবাধিকারের মূলনীতিতে অঙ্গীকারবদ্ধ তাদের সঙ্গে ইরানের সংলাপে মৃত্যুদণ্ডের সংকট অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
আইএইচআর জানিয়েছে, ইরানে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের তথ্যের স্বচ্ছতার ঘাটতি এবং সংবাদ প্রচারে বিভিন্ন ধরনের বিধিনিষেধ থাকায় প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। দেশটিতে বর্তমানে মৃত্যুদণ্ড কেবল ফাঁসির মাধ্যমে কার্যকর করা হয় এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কারাগারের ভেতরে সম্পন্ন হয়।