প্রকাশ: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:৪
যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার পর এবার ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে পর্তুগাল। রোববার পর্তুগালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পাওলো রাঞ্জেল এক ঘোষণায় জানান, পর্তুগিজ সরকার এখন থেকে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। তিনি বলেন, এটি পর্তুগিজ পররাষ্ট্র নীতির একটি মৌলিক, ধারাবাহিক এবং অপরিহার্য দিক।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, পর্তুগাল একটি ন্যায্য ও স্থায়ী শান্তির জন্য দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানকে একমাত্র টেকসই পথ হিসেবে বিবেচনা করে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন যে, ফিলিস্তিনের স্বীকৃতি আন্তর্জাতিক মঞ্চে শান্তি প্রক্রিয়াকে আরও দৃঢ় করবে এবং মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী সমাধানের পথ খুলবে।
নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের আগে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেওয়া হয়। পর্তুগালের পক্ষ থেকে এ পদক্ষেপকে মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি প্রতিষ্ঠায় একটি গুরুত্বপূর্ণ সংকেত হিসেবে দেখা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অনেক দেশ ইতিমধ্যেই ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে এই শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়াকে সমর্থন করেছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী পাওলো রাঞ্জেল স্পষ্ট করেছেন, ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া মানে গাজার মানবিক বিপর্যয় দূর হচ্ছে না। তিনি গাজা উপত্যকায় চলমান দুর্ভিক্ষ, ধ্বংসযজ্ঞ এবং পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বসতি সম্প্রসারণের তীব্র নিন্দা জানান। এ ধরনের মানবিক সংকটের মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সক্রিয় ভূমিকা নেওয়া প্রয়োজন।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই স্বীকৃতিকে আবারও প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র কখনও গঠিত হবে না এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এই পদক্ষেপকে তিনি স্বীকৃতি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। নেতানিয়াহু আরও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, এই ধরনের উদ্যোগ ইসরায়েলের নীতির বিরুদ্ধে এবং তিনি এর প্রতিক্রিয়া দেবেন।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, পর্তুগালের এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা হিসেবে ধরা হচ্ছে। এটি মধ্যপ্রাচ্যে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের প্রতি আন্তর্জাতিক সমর্থনের প্রতিফলন। ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়া দেশগুলো ভবিষ্যতে শান্তি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
সবশেষে বলা যায়, পর্তুগাল ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মঞ্চে মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি প্রক্রিয়ায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে। তবে ইসরায়েলের কঠোর প্রতিক্রিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক জটিলতা এই শান্তি প্রক্রিয়াকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারে।