প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৫২
আফগান সীমান্তবর্তী এলাকায় পাকিস্তান নিরাপত্তা বাহিনী ও পাকিস্তান তালেবানদের মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ ঘটেছে। বাজাউর ও দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানে পৃথক তিনটি অভিযান চলাকালীন এই সংঘর্ষে অন্তত ১৯ জন পাকিস্তানি সেনা এবং ৩৫ জন তালেবান নিহত হয়েছে। ঘটনা শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) আল জাজিরার প্রতিবেদনে নিশ্চিত করা হয়।
পাকিস্তানি সেনাবাহিনী সূত্রে জানা যায়, উত্তর-পশ্চিম খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের বাজাউরে এক অভিযান চলাকালীন ২২ জন তালেবান সদস্য নিহত হয়। একই সময় দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানের পৃথক অভিযানে আরও ১৩ জন তালেবান নিহত হয়। এসব অভিযানে সেনারা নিজেদের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করেছে।
দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানে অভিযানকালে ১২ জন সেনা শহীদ হন। লোয়ার দির এলাকায় আরেকটি সংঘর্ষে সেনারা একটি তালেবান আস্তানা ধ্বংস করার সময় সাতজন সৈন্য নিহত হন, পাশাপাশি ১০ জন বিদ্রোহী যোদ্ধাও নিহত হয়। সেনাবাহিনী নিহত তালেবানদের “খোয়ারিজ” হিসেবে বর্ণনা করেছে।
তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হামলার দায় স্বীকার করেছে। ইসলামাবাদ মনে করছে, পাকিস্তানি তালেবান আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহার করে পাকিস্তানে হামলা চালাচ্ছে। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কাবুলের তালেবান সরকারকে তাদের ভূখণ্ডের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত না হওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছে।
ইসলামাবাদ দাবি করেছে, পাকিস্তান তালেবান ভারতীয় সমর্থিত, যদিও নয়াদিল্লি এই অভিযোগ অস্বীকার করে এবং প্রমাণ দেখায়নি। সাম্প্রতিক সংঘর্ষ ও হতাহতের ব্যাপারে কাবুলের তালেবান বা ভারতের পক্ষ থেকে এখনও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
পাকিস্তান দীর্ঘদিন ধরে বলছে, আফগানিস্তানের মাটিকে ব্যবহার করে তালেবানরা তাদের সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছে এবং এটি দুই দেশের সম্পর্কের জন্য উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেনাবাহিনী দাবি করছে, এ ধরনের অভিযানগুলো দেশের সীমানা নিরাপদ রাখতে অপরিহার্য।
এই সংঘর্ষে নিহত ও আহতদের সংখ্যা এবং ঘটনাস্থলের নিরাপত্তা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলেও নজর রয়েছে। পাকিস্তানি সীমান্তবর্তী এলাকায় নিরাপত্তা পরিস্থিতি এখনও সংবেদনশীল এবং বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘর্ষ চলমান।